ভারতীয় বিমান ধ্বংস করার পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র
পূর্ব পাকিস্তানী নেতাদের অভিযােগ
নয়াদিল্লী, ১২ ফেব্রুয়ারি (ইউ,এন,আই)- পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ যেহেতু জাতীয় পরিষদে সংখ্যা গুরু দল এবং প্রশাসনিক ক্ষমতায় তারাই বসবে সেজন্য পশ্চিম পাঞ্জাবের নেতারা দেশে অ-সামরিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে বাধা সৃষ্টি করেছে। এ অভিযােগ পূর্ব পাকিস্তানের নেতারা এবং সংবাদপত্রগুলি করেছেন। তাদের মতে শুধুমাত্র এই কারণেই প. পাকিস্তানের নেতারা ভারতীয় বিমান ধ্বংস করার মত যুগিয়েছেন। এখানে স্মরণ করা যেতে পারে, পূর্ব পাকিস্তানের তাবৎ রাজনৈতিক দল এবং সংবাদপত্র ভারতীয় বিমানটি জোর করে নামান থেকে ধ্বংস করা পর্যন্ত সমস্ত ঘটনারই শুধু নিন্দাই করেন নি উপযুক্ত তদন্তের দাবি করেছেন।
রেডিও পাকিস্তানের খবর উদধৃত করে ইউ এন আই জানাচ্ছে আজ রাওয়ালপিন্ডিতে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জনাব জেড এ ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ আলােচনা করেন। যদিও কি কি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলােচনা হয়েছে তা জানা যায় নি তবে বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট সাহেব ঘােষণা করেছেন যে, দেশের সংবিধান রচনার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাতীয় পরিষদে সংখ্যালঘু দলের নেতা ভূট্টোর ঢাকা সফরের পর এই প্রথম প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার সাক্ষাত্যার ঘটল।
পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী দলের শেখ মুজিবর রহমানের সঙ্গে নিষ্ফল আলােচনার পর জনাব ভুট্টো লাহােরে এসেই প্রথম যে কাজ করেছিলেন তাহলাে ভারতীয় বিমান ছিনতাইকারীদের সঙ্গে আলাপ। একথা এখন মনে করা হচ্ছে যে তারই পরামর্শে ছিনতাইকারীরা বিমানটি ধ্বংস করে।
জনাব ভুট্টোর সংগে পাকিস্তানের অন্যকোন দল যে একমত হতে পারছে না তার আরও উদাহরণ পাওয়া গেছে। তার অন্যতম পরামর্শ হ’ল “আধা সামরিক বাহিনী” (প্যারা মিলিটারী ফোর্স)র আড়ালে গণফৌজ তৈরি করা। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পরামর্শের কঠোর সমালােচনা করে বলেছেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলিকে এধরনের বাহিনী গঠন করতে দেওয়া হয় তবে সদ্য প্রাপ্ত গণতান্ত্রিক অধিকারগুলি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।
পি টি আই খবরটি দিয়ে জানাচ্ছে, পাকিস্তান গণতান্ত্রিক দলের বর্ষিয়ান নেতা জনাব সালাউদ্দিন খাঁ জনগণকে এ সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, বিতাড়িত ডিক্টেটর আয়ুব খার কথা সময়ের তারা যেন স্মরণে রাখেন এবং আরেকজন ডিক্টেটরকে ক্ষমতায় আসতে না দেন।
সূত্র: কালান্তর, ১৩.২.১৯৭১