আলােচনার তৃতীয় দিনে ইয়াহিয়ার সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩০ জন নিহত
মুজিবর রহমানের কঠোর ভাষায় নিন্দা
নয়াদিল্লী ২০ মার্চ (ইউ এন আই) – পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবরের আলােচনা যখন পর্যায়ক্রমে অগ্রসর হয়ে চলেছে ঠিক তখনই গতকাল এই আলােচনায় তৃতীয় দিনে ঢাকার কাছেই জয়দেবপুরে ইয়াহিয়া খানের সেনাবাহিনীর রক্তাক্ত হাত আরও ৩০টি অমূল্য জীবন হরণ করেছে। সৈন্যবাহিনীর এই গুলিবর্ষণের ফলে আরও ৬০ জনের অধিক ব্যক্তি আহত হন। ঘটনাস্থলে কার্ফ বলবৎ হওয়ায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করাও সম্ভব হয়নি।
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমান অত্যন্ত কঠোর ভাষায় এই নিরস্ত্র বেসামরিক জনগণের উপর সেনাবাহিনীর বর্বর আক্রমণের নিন্দা করেন।
তিনি বলেন বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছে। বাংলাদেশের জনসাধারণ জীবন বিসর্জন দিতে জানে। তাদের রক্তক্ষরণ ব্যর্থ হবে না।
গতরাত্রির গণহত্যার এই বীভৎসতার মধ্যেই আলােচনার চতুর্থ দিনে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ও শেখ মুজিবর রহমান বৈঠকে মিলিত হন।
আলােচনা ২ ঘন্টা ১৫ মিনিটকাল স্থায়ী হয়। আজকের আলােচনায় সভাপতি শ্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান সারা পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মুশতাক আহম্মদ প্রমুখ।
আলােচনার শেষে শেখ মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের নিকট জানান যে আলােচনায় কিছুটা অগ্রগতি লক্ষ্য করে যাচ্ছে। এবং আগামী সােমবার পুনরায় তাঁদের আলােচনা শুরু হবে।
গতকাল জয়দেবপুরে সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ মুজিবর জানান যে, প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অসহযােগ আন্দোলন চলবে
আইন অমান্য আন্দোলনের আজ ছিল ১৯তম দিন। শেখ মুজিবর রহমান ঘােষণা করেন যে, তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চলবে।
ভুট্টো ঢাকায় আসছেন
পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শ্রী জেড এ ভুট্টো করাচীতে বলেন যে তার বক্তব্যের উপর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের জবাব সন্তোষজনক। তাই তিনি পূর্ব সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন এবং সত্বর ঢাকা রওনা হবেন। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট এক প্রতিনিধিদল সহ তিনি ঢাকায় আসছেন।
সূত্র: কালান্তর, ২১.৩.১৯৭১