পূর্ব-পাকিস্তানে বন্দর শ্রমিকদের অস্ত্রশস্ত্র খালাস করতে অস্বীকার
অসহযােগ আন্দোলনে ঝড়ের সংকেত
নয়াদিল্লী, ১৩ মার্চ (ইউ এন আই) – আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অসহযােগ আইন অমান্য আন্দোলনের আজ ১২ দিন।
যদিও পূর্ব পাকিস্তানে তুলনামূলক ভাবে শান্তি ও স্তব্ধতা বিরাজ করছে তথাপি পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এ নিস্তব্ধতা ঝড়ের পূর্বাভাস। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে বন্দর শ্রমিকগণ জাহাজ থেকে অস্ত্রশস্ত্র খালাস করতে অস্বীকার করেছেন।
অপরপক্ষে, সামরিক শাসন কর্তৃপক্ষের এক আদেশে প্রতিরক্ষা দপ্তরের বেতন ভুক্ত সমস্ত কর্মচারীদের আগামী সােমবার সকাল দশটায় কাজে হাজির থাকার নির্দেশ জানানাে হয়েছে। এই আদেশে আরও বলা হয়েছে যে যারা কাজে যােগ দেবে না তাদের চাকুরী থেকে বরখাস্ত করে দেবার হিসাবে ঘােষণা করা হবে। এই ব্যক্তিদের সামরিক আদালতে বিচার করা হবে। সামরিক আইন অনুসারে এই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে।
‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে এই আদেশ প্রচারিত হয়। এ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি।
পূর্ববঙ্গের বন্যার্তদের জন্য গমবােঝাই যে এক মার্কিনী জাহাজ চট্টগ্রামের দিকে যাত্রা করেছিল সেই জাহাজকে কেন্দ্রীয় সরকার করাচীতে পৌছবার নির্দেশ দিয়েছে।
এ সম্পকে আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শ্রী মনসুর আলী খান গভীর বিক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন যে পূর্ব পাকিস্তানে বিগত ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এলাকার জনসাধারণের জন্য উপরােক্ত গম পাঠানাে হয়েছিল এবং বােঝাই এই জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে করাচীতে যাত্রা করার নির্দেশ অত্যন্ত আপত্তিকর।
শ্ৰী মনসুর আলী আলী খান ঘােষণা করেন যে বাংলা দেশের মানুষ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য যে কোন ত্যাগ বরণ করতে প্রস্তুত।
সূত্র: কালান্তর, ১৯.৩.১৯৭১