১০ মার্চ ইয়াহিয়া খা নেতাদের সঙ্গে বসবেন
নয়াদিল্লী, ৩ মার্চ (ইউ এন আই) – পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ স্থগিতের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানে এক বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে।
সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান আজ বনধ
৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের দিন ধার্য করা হয়েছিল-আজ সেই অধিবেশনের পরিবর্তে জনগণের বিক্ষোভ স্তব্ধ করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের জরুরী সরকার ঢাকায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য কার্ফ জারী করেছে। রংপুর ও সিনেটেও ২৪ ঘন্টাব্যাপী কার্টু বলবৎ করা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনায় অন্ততঃ ২ জন নিহত হয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান আগামী ১০ মার্চ সংবিধান রচনার প্রশ্ন নিয়ে যে অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে তার মিমাংসার জন্য ঢাকায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের এক সম্মেলন ডেকেছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার সুনিশ্চিত না করা পর্যন্ত অহিংসা অসহযােগ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ মুজিবর রহমান ঘােষণা করেন যে বিগত ৭ ডিসেম্বর গণপরিষদের নির্বাচনে তার দলের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার রায়কে কোন শক্তি স্তব্ধ করতে পারবে না। ঢাকা পল্টন ময়দানে এক বিরাট জনসভায় ভাষণদান প্রসঙ্গে শেখ মুজিবুর বলেন যে এই অহিংসা অসহযােগ আন্দোলনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার রায়কে দাবিয়ে রাখায় প্রতিবাদ উত্থিত হবে।
এই আন্দোলনের কর্মসূচী সম্পর্কে শেখ মুজিবর ঘােষণা করেন প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বেলা দুটো পৰ্য্যন্ত এই চার ঘন্টা ব্যাপী হরতাল পালিত হবে। অফিস দোকান কল কারখানা প্রভৃতি এই সময় বন্ধ রাখতে হবে।
আগামী রবিবারের মধ্যে সরকার যদি জনতার দাবি পূরণ সম্পর্কে কোন বক্তব্য না রাখেন তবে জনগণ ট্যাক্স বন্ধ আন্দোলন শুরু করেন।
পত্র পত্রিকার উপর যে সরকারী নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে তার প্রতি লক্ষ্য রেখেই সেখ মুজিবর আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ব পাকিস্তান বেতার ও টেলিভিশন তার দলের খবরাখবর অবশ্য প্রচার করবে।
সূত্র: কালান্তর, ৪.৩.১৯৭১