বাঙলাদেশে দু’ধরনের আধা সামরিক বাহিনী
লুঠ-অত্যাচার অব্যাহত রাখার জন্য পাক সমরচক্রের নয়া চাল
মুজিবনগর, ১ জুলাই (ইউ এন আই) – বাংলাদেশের জঙ্গী প্রশাসক তাদের লুটেরা নীতি বজায় রাখার জন্য নতুন নতুন জঙ্গীবাহিনী গঠন করার চেষ্টা করেও আশানুরূপ ফল পাচ্ছে না। গেরিলা আক্রমণের আকস্মিকতায় পাকসেনাদের নাভিশ্বাস উপস্থিত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
সম্প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানীদের নিয়ে শান্তি বাহিনী ও বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনী নামে ২টি আধা সামরিক বাহিনী গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বেশ কয়েক ব্যাটেলিয়ন পলিস ও আধা সামরিক বাহিনী থেকে বেশ কয়েক ব্যাটেলিয়ন পুলিস ও আধা সামরিক বাহিনী এখানে মােতায়েন রাখা হয়েছে। তাছাড়া পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বেশ কয়েক ব্যাটেলিয়ন পুলিস ও আধা সামরিক বাহিনী এখানে মােতায়েন রাখা হয়েছে।
বাঙলাদেশের জঙ্গী প্রশাসক এখন এই নতুন তৈরি বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনীকে পাক ফৌজের সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিয়ােগ করছে-অন্য দিকে শান্তি বাহিনী গ্রামাঞ্চলগুলিতে লুঠতরাজ চালিয়ে ভারতের বুকে শরণার্থীদের চাপ অব্যাহত রাখার কূট কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে”।
তাছাড়া এখানে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে যে সমস্ত আধা-সামরিক বাহিনীগুলি আমদানি করা হয়েছে এগুলি হল কুখ্যাত টচি স্কাউট, খাইবার রাইফেলস, শত রেনজার প্রতি ইউনিট। এই ইউনিটগুলিকে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল পাহারার কাজে লাগানাে হত। এখন এদের জায়গায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে পাক ফৌজের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
পাক ফৌজের রক্তাক্ত হাতকে আরাে জোরদার করার জন্য এই সব আধা সামরিক বাহিনীগুলিকে বেপরােয়া লুঠতরাজের অধিকার দেওয়া হয়েছে।
গেরিলা ভীতি
যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলগুলিতে এই সব বাহিনীদের সংযােগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের চেষ্টা গেরিলা আক্রমণ ও তৎপরতায় যত ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে তত ক্ষিপ্ত হয়ে এরা লুঠতরাজে… পাক ফৌজদের বিভীষিকা দেখিয়ে দিচ্ছে।
কতগুলি অঞ্চলে আবার পাকফৌজরা বেসামরিক বেশবাসে চলাফেলা করছে গেরিলাদের তীক্ষ্ম নজর এড়াবার জন্য।
কয়েকটি স্থানে জানা গেছে গেরিলাদের আকস্মিক আঘাতের ভয়ে পাক-ফৌজরা সীমান্তের চৌকি ঘাঁটি ছেড়ে রাতে শিবিরে এসে হাঁফ ছেড়ে বাঁচছে।
পাক ফৌজদের দু’মাসের মাইনে বাকি
ইতিমধ্যে খবরে প্রকাশ, বাঙলাদেশে ৫০ ব্যাটেলিয়ান পাকিস্তানী ফৌজ রয়েছে। তারা ২ মাস থেকে মাইনে পাচ্ছে না। বিভিন্ন মহল থেকে ফৌজি বেতন চুকিয়ে দেবার মত প্রাণপণ চীৎকার শুরু হয়েছে। মাইনে না পাওয়ায় কয়েকটি গ্রাম অঞ্চলে ফৌজী দৌরাত্ম চরম আকারে দেখা দিয়েছে বলে প্রকাশ।
সূত্র: কালান্তর, ১.৭.১৯৭১