You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.07 | বাঙলাদেশের কয়েকজন মুক্তিসংগ্রামীর চিঠি | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশের কয়েকজন মুক্তিসংগ্রামীর চিঠি

মহাশয়, বাংলাদেশের গণহত্যাকারী ইয়াহিয়া চক্রের হাতকে শক্ত করতে মার্কিন জঙ্গীরা জাহাজ বােঝাই করে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। খবরটি কাউকে বিস্মিত করেছে। কি না জানিনা। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীকারের জন্য সংগ্রামী প্রতিটি মানুষ বিশেষ করে ছাত্র-তরুণ-বুদ্ধিজীবী জানেন যে, সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন কর্তাদের ট্যাঙ্ক, বিমান, কামান আর ডলার দিয়েই গড়ে উঠেছে পাকিস্তানের জঙ্গীশাহী। শুধু ২২ টি একচেটিয়া ধনিক পরিবারের স্বার্থ নয়, সাম্রাজ্যবাদী শােষণেরও পাহারাদার হল পাকিস্তানের জঙ্গীকর্তারা।
সুতরাং গরজ বড় বালাই। ইয়াহিয়ার ভরাডুবি ঠেকাতে মার্কিন মারণাস্ত্র তাে দিতে হবেই তবে মার্কিন কর্তারা যদি ভেবে থাকে যে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনতার ও সংগামরত মুক্তি ফৌজের মনােবলকে দুর্বল করা যাবে এবং সে অবস্থায় লড়াইয়ের জুজু দেখিয়ে তাদের মতাে মীমাংসার মায়ার হরিণ দেখাবার চেষ্টা করা চলবে তাহলে বলতে হবে তারা মুখের স্বর্গে বাস করছে।
আমরা শুনেছি, খােদ আমেরিকার কয়েকটি প্রভাবশালী সংবাদপত্র, আইনসভার অনেক সদস্য ইয়াহিয়াঘাতকচক্রের দস্যুবৃত্তির নিন্দায় সরব এবং তারাই তাদের শাসকদের এ অস্ত্র সাহায্যের প্রতিবাদে মুখর। মুক্তিফৌজের যােদ্ধারা বিশ্বাস করেন যে, তাদের এ ন্যায়যুদ্ধের দৃঢ় সমর্থনে আছেন আমেরিকাসহ বিশ্বের সবকটি দেশের গণতন্ত্রমনা ও স্বাধীনতাকামী জনগণ। তাই শত মার্কিন অস্ত্র সাহায্যও মুক্তিযােদ্ধাদের মনােবলকে টলাতে পারবে না; বরঞ্চ ঘৃণার আগুনে পােড়া মনের অধিকতর প্রত্যয় ও উৎসাহ নিয়ে মুক্তিফৌজ দেশমাতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন।
ইতি
ফরিদ আহমেদ, মােঃ জামারুলাহ, মজিবর রহমান, অনুপকুমার ঘােষ, মােহঃ আফছার উদ্দীন, আমিনুর রহমান, শেখর বন্দোপ্যাধ্যায় ও অনেকে।

সূত্র: কালান্তর, ৭.৭.১৯৭১