You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.10 | বাঙলাদেশ সরকারের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি লাভ | সপ্তাহ - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশ সরকারের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি লাভ
[ বিশেষ প্রতিনিধি ]

৬ ডিসেম্বর ভারত সরকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ৭ ডিসেম্বর ভুটানও বাঙলাদেশের স্বাধীন সরকারকে স্বীকার করে নিয়েছেন। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষের মনে জেগেছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। তারা আশা করেছেন, অদূর ভবিষ্যতে অন্যান্য অনেক রাষ্ট্রই এগিয়ে আসবেন বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিতে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার বাঙলাদেশে সমস্ত বৃহৎ শিল্প, ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ করবে এবং ভারত ও বাঙলাদেশের মধ্যে যাতায়াতে কোন পাশপাের্ট ভিসা লাগবে না। বাংলাদেশ সর্বপ্রথম ভারত ও সােভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গেই বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করবে।
বাঙলাদেশ সরকার আজ স্বীকৃত রাষ্ট্র এবং নতুন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কর্মনীতি ঘােষণা হতে চলেছে। প্রকাশ, ভারত ও বাঙলাদেশের মধ্যে ভাবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে কথাবর্তা চলছিল। এখন বাঙলাদেশ স্বীকৃত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ায় এই বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদিত হতে চলেছে। এই চুক্তি হবে দুই বৎসরের মেয়াদে। এই চুক্তিমতাে ভারত ও বাঙলাদেমের মধ্যে ২০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে। ভারত বাঙলাদেশকে দেবে কয়লা, চিনি, সিমেন্ট, বিড়িপাতা, সাবান, বিগারেট, কাপড়। বাঙলাদেশ ভারতকে দেবে পাট, চামড়া, মাছ, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতি। বাঙলাদেশে কয়লা আমদানি হতাে চীন, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে এবং কয়লার দাম পড়ত মণ প্রতি নয় টাকা। এখন ভারতের কয়লা বাঙলাদেশে সাড়ে তিন টাকা। বাঙলাদেশ সরকার বাঙলাদেশের সমস্ত বড় শিল্প-কারখানা জাতীয়করণ করবে। দাউদ আদমজী ইস্পাহানী ও আয়ুব খার পুত্রের গান্ধায় ইনডাসট্রির হাতে এইসব শিল্প আছে। এইসব শিল্পের পুঁজির পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বাঙলাদেশ সরকার কোন একচেটিয়া পুঁজিপতিকে বাঙলাদেশে ব্যবসা করতে দেবেন না।
বাঙলাদেশ সরকার ভারত ও বাঙাদেশের মধ্যে যাতায়াতে কোন বিধিনিষেধ রাখবেন না। পূর্বইউরােপের বহু দেশের মতাে একটা চেকপােস্ট থাকবে যেখান থেকে অনুমতি নিয়ে উভয় দেশের নাগরিক উভয় দেশে যাতায়াত করতে পারবেন। তবে বাঙলাদেশে বসবাসের অধিকারী হবেন একমাত্র বাঙলাদেশের নাগরিকরা।

সূত্র: সপ্তাহ, ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১