You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংলাদেশের পরিস্থিতির দরুণ
বিশ্ব কাঁচা পাটের বাজারে অভাব দেখা দিতে পারে

নয়াদিল্লী, ৬ই এপ্রিল (আই-পি.এ) বাংলাদেশের মুক্তি-সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের বাজারে কাঁচা পাটের দারুণ অভাব দেখা দিতে পারে বলে এখানকার শিল্প মহলগুলি আশংকা করছে।
শেখ মুজিবর রহমানের মুক্তি সেনানীদের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বিশ্বের কাঁচাপাট ক্রেতার এবং পাট জাত দ্রব্য প্রস্তুতকারকেরা তাদের প্রয়ােজন মাফিক জাহাজ সরবরাহ বাংলাদেশ থেকে পাচ্ছে না। এমনকি যদি অদূর ভবিষ্যতে যুদ্ধ বন্ধও হয়ে যায় তথাপি দু’বছরের আগে বন্দরের সুযােগ সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়। এবং একথাও ঠিক যুদ্ধ চলাকালীন সময়েও কোনও জাহাজ কোম্পানী যুদ্ধাঞ্চলে স্টীমার পাঠাবার ঝুঁকি নেবে না।
পাটের অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও এখন খুব দূরে নয় তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। কারণ যুদ্ধ যদি চলতেই থাকে তবে এমরশুমে পাট উৎপাদন যথেষ্ঠ পরিমাণে ব্যাহত হবে।
যুক্তরাজ্য সহ মহাদেশের অন্যান্য স্থানে সামনের মাসগুলিতে যে পরিমাণে প্রকৃত পাট লাগবে তা এখনও তাদের পক্ষে কেনা সম্ভব হয়নি।
কাঁচা পাটের অভাবে সিন্থেটিক সহ অন্যান্য বিকল্প ব্যবস্থাকারকদের সুযােগ এনে দেবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এখানাকার সরকারী মহলের ধারণা, বাংলাদেশের ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় শিল্পের স্বার্থে বিশ্বের পাট বাজারের এই শূন্যতা বাড়তে দেওয়া ঠিক হবে না। শিল্পের স্বার্থেই পাটের বাজারকে সীমাবদ্ধ না রাখাই উচিত হবে বলে তারা মনে করছেন। কেননা পাটজাত দ্রব্যের বিশ্ব ক্রেতারা স্বভাবতই ভারতের কাছেই তাদের অর্ডার দিতে বাধ্য হবে।
ইতিমধ্যে ২৫ মার্চের পরেই অর্থাৎ যুদ্ধ শুরু হওয়ার মুহূর্তেই আসাম বাম পাটের দর মণ পিছু ৬ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সূত্র: কালান্তর, ৭.৪.১৯৭১

error: <b>Alert:</b> Due to Copyright Issues the Content is protected !!