You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.22 | জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের চলতি অধিবেশনে বাঙলাদেশ প্রশ্নও নানাভাবে উঠতে পারে | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের চলতি অধিবেশনে বাঙলাদেশ প্রশ্নও নানাভাবে উঠতে পারে

জাতিসংঘ, ২১ সেপ্টেম্বর (এপি)—আজ থেকে জাতিসঙ্রে সাধারণ পরিষদের যে ২৬ তম বার্ষিক অধিবেশন আরম্ভ হচ্ছে তাতে চীনের জাতিসঙ্ঘভুক্তির প্রশ্ন সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন হয়ে উঠতে পারে।
এই অধিবেশনে ভূটান, বাহেরিন ও কাতার নতুন সদস্যরূপে যােগদান করবে। ফলে সদস্য দেশের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৩০।
সদস্যদের আরেকটি কর্তব্য হবে সচিব প্রধানের পদে নতুন লােক নিয়ােগ করা। ৩১ ডিসেম্বর বিদায় নিচ্ছেন এবং ঐ পদে আবার নিযুক্ত হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
এই অধিবেশনে সমান গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হবে সােভিয়েত পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রোমিকোর সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিবের ঘরােয়া আলােচনা। গ্রোমিকো বােধহয় শুক্রবার এখানে পৌছবেন এবং তখন তাদের মধ্যে আলােচনায় যদিও পশ্চিম এশিয়ার সমস্যা প্রাধান্য লাভ করবে, তবু নতুন সচিব প্রধান নিয়ােগ, গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রশস্ত্র সীমিতকরণের আলােচনা, ইয়ােরােপীয় নিরাপত্তা সম্মেলন প্রভৃতি বিষয়ও কম প্রাধান্য পাবে না।
অধিবেশনের প্রথম কাজ হবে বিদায়ী সভাপতি এডওয়ার্ড হামফ্রের বিদায় গ্রহণ এবং এই অধিবেশনের নতুন সভাপতি নির্বাচন।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদম মালিক এই অধিবেশনের সভাপতি নির্বাচিত হবার কথা।
চীনের অন্তর্ভুক্তি সম্পর্কে শক্তির ভারসাম্য কোনদিকে ঝুঁকেছে তা আগামীকাল রাতে অথবা পরশু সকালে প্রকাশ পাবে। ২৫ টি দেশ নিয়ে গঠিত স্টীয়ারিং কমিটি আলােচ্য বিষয়গুলির মধ্যে কোনটাকে অগ্রাধিকার দেবে তাতেই তা প্রাথমিকভাবে প্রকাশ পাবে। এ ব্যাপারে আলবানিয়ার একটি প্রস্তাব আছে যাতে গণচীনকে জাতিসঙ্ঘভুক্ত করা ও তাইওয়ানকে বিতাড়িত করার দাবি রয়েছে। দ্বিতীয় প্রস্তাব হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। তাতে চীনকে জাতিসঙ্ভুক্ত করা এমনকি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য করার দাবিও আছে; কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এ দাবিও রয়েছে যে তাইওয়ানকে বহিস্কৃত করার প্রশ্নকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে গণ্য করা হবে, অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশের ভােটাধিক্যে পাশ করাতে হবে।
স্টীয়ারিং কমিটি দুটি প্রস্তাবকে একই আলােচ্য বিষয় বলে গণ্য করতে অথবা দুয়ের কোনটা অগ্রাধিকার পাবে তা নিয়ে ভােটাভুটিতে নামতে পারে।
কালান্তর’-এর নয়াদিল্লীর সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের এই অধিবেশনে বাঙলাদেশ সমস্যাও কোনাে না কোনাে কমিটির আলােচনায় এবং এমনকি সাধারণ পরিষদের বিতর্কেও উত্থাপিত হবে। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ অধিবেশন কালে উপস্থিত থাকার জন্য যে প্রতিনিধিদল নিউইয়র্ক যাচ্ছেন তাও এ অধিবেশনের একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

সূত্র: কালান্তর, ২২.৯.১৯৭১