ভীত সন্ত্রস্ত ঢাকা
নয়াদিল্লী, ১৭ অক্টোবর- “ভীত সন্ত্রস্ত ঢাকা শহর।” তিনদিনব্যাপী বাঙলাদেশ সফর শেষ করে নয়াদিল্লী ফিরে এসে সুইডেনের সাংবাদিক লারগানার এরল্যান্ডসন এই মর্মে মন্তব্য করেছেন। সংবাদ আই পি এর।
রেডিও সুইডেনের প্রতিনিধিরূেপে ঢাকা সফরের পর শ্রী এরল্যাণ্ডসন বলেছেন যে সর্বত্রই যে পাক সেনাবাহিনী মােতায়েন রয়েছে তা নজরে আসবেই। সমস্ত সুবিধাজনক স্থানে, এমন কি ডাকঘরেও হােটেল ইনটারন্যাশনালেও সামরিক প্রহরা রয়েছে। হােটেলে প্রবেশ করারও বাইরে আসার সময় তল্লাসী চালানাে হচ্ছে।
ঢাকা সন্ত্রাস-কবলিত শহরে পরিণত হয়েছে। সূর্যাস্তের পূর্বেই দোকান-পাট বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং এই সময়ে যুবকদের রাস্তায় দেখাই যায় না।
শ্রী এরল্যাণ্ডসন বলেছেন যে যদিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ছাত্রের তালিকা রয়েছে, কিন্তু ৩ থেকে ৪শ ছাত্র ক্লাসে যােগ দেয়। সংবাদপত্রগুলির ওপর সেন্সরের কড়াকড়ি ব্যবস্থা রয়েছে। বাঙলাদেশ’ শব্দটি সংবাদপত্রের চৌহদ্দীর মধ্যে কোন স্থান নেই এবং শেখ মুজিব সম্পর্কিত যে কোন সংবাদেরও ঐ একই হাল।
তিনি আরও বলেছেন যে সফররত সাংবাদিকের পক্ষে পরিস্থিতির সঠিক চিত্র সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। ঢাকার বাইরে সফর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মুক্তি বাহিনী ও তার কার্যকলাপের সংবাদ বিভিন্ন সূত্রে শহরে এসে পৌছায়। গেরিলাদের মাইন আক্রমণে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ধ্বংসের সংবাদ ঢাকায় পৌঁছেছিল।
শ্রী এরল্যান্ডসন বলেছেন, যেহেতু পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষের হাতে ত্রাণ- বাবদ সাহায্য বিলি-বন্টনের দায়িত্ব রয়েছে সেহেতু বিভিন্ন দেশের প্রদত্ত ত্রাণ সাহায্যের বিলি-বন্টন মােটেই আশাপ্রদ নয়।
তিনি এই মর্মে অভিমত প্রকাশ করেছেন যে ত্রাণবাবদ সাহায্যের বেশির ভাগটাই পাক সেনারা ভােগ করছে।
সূত্র: কালান্তর, ১৮.১০. ১৯৭১