কলকারখানা আজও অচল
চট্টগ্রামে সমস্ত কল-কারখানা এখনও সম্পূর্ণ অচলাবস্থায় রহিয়াছে। চট্টগ্রাম রেলওয়েতে ২০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ২৫০০ অ-বাঙ্গালী শ্রমিক কাজে যােগ দিয়াছে। এ কে খান জুটমিল, ইস্পাহানি জুটমিল সম্পূর্ণ বন্ধ। জেঠীর কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ। সামরিক অস্ত্রশস্ত্রগুলি ফ্লাটে তুলিয়া নিয়া কালুরঘাটে নিয়া যায়। সেখানে ক্যাম্পের লােক দিয়া সেগুলি নামানাে হয়। চট্টগ্রাম স্টীল মিলে ৩০০০ শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করিতেছে। পাঞ্জাবীরা সমস্ত কোর্ট বিলডিং এ মােটর ভেইকল ডিপার্টমেন্ট ছাড়া অন্য কোন ডিপার্টমেন্ট চালু করিতে পারে নাই। কালুর ঘাট জুট মিলের ১৪০০০ শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ৩০০ শ্রমিক কাজে যােগ দিয়াছে। অত্র এলাকার ইব্রাহিম ম্যাচ ফ্যাক্টরীতে ১৫০ শ্রমিক কাজে যােগ দিয়াছে। এ, কে খান ম্যাচ ফ্যাক্টরী সম্পূর্ণ বন্ধ, অসীম জুট মিল সম্পূর্ণ বন্ধ। স্থানীয় কিছু শ্রমিককে হানাদারবাহিনী ধরিয়া নিয়া মিল চালু করার চেষ্টা করিতেছে। নাসিরাবাদ শিল্প এলাকা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ। সেখানকার কোন শ্রমিক কাজে যােগ দেয় নি। মুক্তিবাহিনী সক্রিয় গ্রামের চেয়ারম্যান ও গুণ্ডাবাহিনী নিরীহ জনসাধারণকে পর পর খাজনা আদায় করার চাপ দিলেও জনসাধারণ খাজনা দিতেছে না।
এদিকে মুক্তিবাহিনী বিভিন্ন এলাকায় তহশীল অফিস পােড়াইয়া দিতেছে। আনােয়ারা থানা, গুজারা তহশীল অফিস, পটিয়া থানা কেলিশহরের তহশীল অফিস রাঙ্গুনিয়া তহশীল অফিস ইতি মধ্যেই পােড়ানাে হইয়াছে, মুসলিম লীগের দালাল বাহিনী খতম অভিযান ও চালাতেছে। বাঁশখালি থানার ৪ জন মুসলিম লীগ দালালকে গুলি করা হইয়াছে।
জনতা জাতীয় মুক্তিফ্রন্টও নির্দেশ চায়
চট্টগ্রামের জনগণ মুক্তিসগ্রামের সফলতায় পুরাপুরিই বিশ্বাসী। মুক্তি সংগ্রামকে দ্রুত সফলতায় পৌছাইয়া দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), কমিউনিস্ট পার্টি প্রভৃতি সগ্রামী দলের ঐক্যবদ্ধভাবে অবিলম্বে জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠন করা প্রয়ােজন বলিয়াও জনগণ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। বর্তমানে জনসাধারণ স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র হইতে বিভিন্ন নির্দেশ জ্ঞাত হইতে ও মুক্তি সগ্রামের পক্ষে বিভিন্ন কার্য সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণের জন্য খুবই আগ্রহী।
সূত্র: কালান্তর, ৩.৭.১৯৭১