বাঙলাদেশের গণহত্যায় কাশ্মীরে গণভােট ফ্রন্টে মােহভঙ্গ
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ৩০ অক্টোবর- বাঙলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্যদের বর্বরতা কাশ্মীরের শেখ অনুগামী গণভােট ফ্রন্ট পন্থীদের মােহভঙ্গ করেছে। গত ১৯৬৫ সালের ভারত-পাক সংঘর্ষের প্রাককালে ব্যাপকভাবে পাকিস্তানীদের অনুপ্রবেশ হয়েছিল এবং তারা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়ও পেয়েছিল। কিন্তু এবারে এই অনুপ্রবেশকারীরা কাশ্মীরে সে আশ্রয় পাবে না।
সম্প্রতি কাশ্মীর সফর করে প্রবীণ কংগ্রেসী নেতা ও রাজ্যসভার সদস্য শ্রীঅর্জুন অরােরার এই ধারণা হয়। আজ এখানে সাংবাদিকদের কাছে তার এই ধারণা অভিব্যক্ত করে শ্রীঅরােরা বলেন যে, কাশ্মীরীরা মনে করছেন, মুসলিম হয়েও পশ্চিম পাকিস্তানীরা বাঙলাদেশের মুসলিমদের যদি এমন ব্যাপক ও নৃশংসভাবে হত্যা করে থাকতে পারে, তাহলে পাকিস্তানীরা কাশ্মীরে ঢুকতে পারলে কাশ্মীরীদেরও অনুরূপভাবে খতম করবে। সেই জন্য কাশ্মীরীরা বাঙলাদেশের গণহত্যায় যেমন উদ্বিগ্ন তেমনি সম্ভাব্য পাকিস্তানী আক্রমণের মােকাবেলা করতে তারা দৃঢ়সংকল্প এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তুতিতে তার সােৎসাহ সহযােগিতা ও সমর্থন জানাচ্ছে।
তিনি আরাে বলেন যে, গণভােট ফ্রন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে এবং এর অনুগামীদের মােহভঙ্গ হতে শুরু করেছে। তবে, ইন্দিরা- কংগ্রেসের প্রতি যে তারা আকৃষ্ট হয়েছে, এখনাে সে কথা বলা যায় না।
কংগ্রেস ফোরাম ফর সােশ্যালিস্ট অ্যাকশনের চেয়ারম্যান হিসাবে শ্রীঅরােরা বলেন, তাঁর ফোরামের কাজ হবে কংগ্রেসের মধ্যে উপদলীয়বাদের বিরুদ্ধে সগ্রাম চালিয়ে কংগ্রেসকে “গণতান্ত্রিক সমাজবাদের পথে অবিচল রাখা। তিনি বলেন, কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা পুননির্ধারণ করতে হবে এবং প্রতিটি সক্রিয় সদস্যকে কোনও না কোনও গণসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। পার্টি ও গণসংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক যৌথ দায়বদ্ধতার মধ্যে দিয়ে কংগ্রেসকে ‘গণভিত্তিক ও কর্মী-বিভত্তিক” দলে পরিণত করতে হবে। তিনি বলেন, সক্রিয় কর্মীদের নির্ধারিত সীমার উর্ধ্বে যে সম্পত্তি থাকবে তা পার্টির হাতে তুলে দেবার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
সূত্র: কালান্তর, ৩১.১০.১৯৭১