পাক দূতাবাস বিশেষ সুবিধা ভােগের অধিকারী নয় বাঙলাদেশ মিশনের প্রধান রসিদ চৌধুরীর অভিমত
(বিশেষ প্রতিনিধি)
নয়াদিল্লী ৪ নভেম্বর- হােসেন আলি ও তার পরিবারবর্গকে মুক্তি না দিলে বাংলাদেশ সরকার যথােচিত প্রতিশােধাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কালান্তরের প্রতিনিধি জানাচ্ছে আজ এখানে বাংলাদেশ মিশনের প্রধান হুমায়ুন রসিদ চৌধুরী একথা বলেন। ইতিপূর্ব তিনি ৪৮ ঘন্টার যে চরমপত্র দিয়েছিলেন আজ দুপুরে তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। পূর্বের মত আজও তিনি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান তা প্রকাশ করেন নি।
হােসেন আলি পাক দূতাবাসের মুখ্য গােয়েন্দা অফিসারের সহকারী। তিনি সম্প্রতি বাঙলাদেশ সরকারের প্রতি তাঁর আনুগত্য প্রকাশ করায় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাকে তার স্ত্রী কন্যা সমেত আটক করে রাখে। এদিকে ৮ ও ৬ বছরের তাদের দুটি নাবালক পুত্র দূতাবাসের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পিতার মুক্তির জন্য ৪৮ ঘন্টার অবস্থান শেষ করছে।
রসিদ চৌধুরী তার ৪৮ ঘন্টার চরমপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণের পর বলেন, তিনি নরওয়ের রাষ্ট্রদূতকে এ সম্পর্কে একটি চিঠি দিয়েছেন। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত দিল্লীর কূটনীতিক কর্মীদের… কলকাতায় বাঙলাদেশে মিশনের প্রধান এম, হােসেন আলি জাতিসংঘের মহাসচিব উ-থান্টকে ঐ মর্মে একটি চিঠি দিয়েছেন।
রসিদ চৌধুরী বলেন, “বিশ্বের কাছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও দিল্লীর দূতাবাসগুলির ডিনের কাছে আমাদের এই আবেদন ব্যর্থ হলে আমরা পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
পাকিস্তানের দূতাবাসে প্রবেশ করে হােসেন আলিকে মুক্ত করার দাবির জবাবে ভারত সরকার ভিয়েনা চুক্তি মতে কূটনৈতিক নিরাপত্তার যে যুক্তি দেখিয়েছেন, রসিদ চৌধুরী সে প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, পাকিস্তান এই বিশেষ সুবিধা দাবি করতে পারে না।
তাঁর যুক্তির পক্ষে রসিদ চৌধুরী বলেন, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানী সৈন্য ও পুলিস করাচীর ভারতীয় দূতাবাসে প্রবেশ করে গােপন ট্রান্সমিটার ও রেডিও তল্লাশি করে সেই চুক্তি খেলাপ করেছে। | রসিদ চৌধুরীর মতে এক্ষেত্রে ভারত হােসেন আলিকে মুক্ত করার জন্য অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকার যখন ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে অনুরােধ জানিয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ৫.১১.১৯৭১