You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.01 | বাঙলাদেশের সরকারকে স্বীকার করুন- লােকসভায় ইন্দ্রজিৎ গুপ্তের জোরালাে দাবি | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশের সরকারকে স্বীকার করুন
লােকসভায় ইন্দ্রজিৎ গুপ্তের জোরালাে দাবি

নয়াদিল্লী, ৩১ মার্চ (ইউ এন আই)-“সেখানকার অভূতপূর্ব পরিস্থিতির কথা মনে রেখে বাংলা দেশের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নটি বিবেচনা করার জন্য লােকসভার কমিউনিস্ট দলের নেতা শ্রীইন্দ্রজিৎ গুপ্ত ভারত সরকারের কাছে আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর অসমাপ্ত বিতর্কে অংশগ্রহণ করে শ্রীগুপ্ত বলেন, “এ ধরণের এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাই জানান হবে।” এ দেশের জনগণ পূর্ব বাংলার ঘটনায় নিশ্রুপ হয়ে বসে থাকতে পারে না বলে তিনি ঘােষণা করেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষণকে “পেছন দিকের এক পদক্ষেপ” বলে উল্লেখ করে কমিউনিস্ট নেতা ক্ষোভের সংগে বলেন, “এই ভাষণে একচেটিয়া পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধে একটি কথাও নেই, ভিয়েতনাম সম্পর্কে নিরপেক্ষ দেশগুলির সম্মেলনে ভারতের বক্তব্য থেকে আরও এগিয়ে না গিয়ে এক পা পিছিয়ে আসা হয়েছে।”
শ্রীগুপ্ত সরকারের কাছে জানতে চান ভূমিসংস্কার সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তকে কবে নাগাদ কার্যকর করা হবে এবং একচেটে বাণিজ্য খর্ব করার জন্য আইনের মাধ্যমে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি অভিযােগ করেন ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর থেকে একবারের মার্চ পর্যন্ত এইসব ব্যবসায়ী পরিবারকে ২৩ টি নতুন লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
ব্যাপক জনসমর্থনের ভিত্তিতে লােকসভায় তাঁর দলের নির্বাচনকে অভিনন্দিত করে কমিউনিস্ট নেতা হুঁসিয়ারি জানিয়ে বলেন, “জনগণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে পরিষ্কার নােটিশ দিয়েছেন যে, তারা কাজ চান” এবং এই আশায় তারা ভােট দিয়েছেন যে, জনগণের আশা-আকাঙ্খকে শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতির মধ্যেই আবদ্ধ রাখা হবে না।
কমিউনিস্ট পার্টিকে শাসক পার্টির সঙ্গে সহযােগিতার প্রস্তুত বিরােধী হিসাবে যারা উল্লেখ করেছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সময়ই দেখিয়ে দেবে কমিউনিস্ট পার্টির প্রকৃত রূপ। তবে দারিদ্র এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য শাসক দল যেসব ব্যবস্থা নেবে সেইসব ক্ষেত্রে কমিউনিস্ট পার্টি “চুক্তিবদ্ধ বিরােধী দল” হিসাবে কাজ করবে। সাম্প্রতিক নির্বাচনে প্রতিক্রিয়ার শক্তি পরাজিত হয়েছে এবং ইন্দিরা কংগ্রেস জয়মুক্ত হয়েছে যাতে মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাধাগুলি তাঁরা দূর করেন। কিন্তু এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে না যতক্ষণ সংবিধান সংশােধন করা হচ্ছে।
ইন্দিরা কংগ্রেসের “গরিবী হঠাও” শ্লোগানের কথা উল্লেখ করে শ্রীগুপ্ত বলেন, “যথাযােগ্য সংবিধান সংশােধন করে মৌলিক অধিকারের সংজ্ঞা নিরূপণের ক্ষমতা সংসদকে দেওয়া হলেও এর অর্থ খুঁজে পাওয়া যাবে।”

সূত্র: কালান্তর, ১.৪.১৯৭১