পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম আরাে দৃঢ়তর ভিত্তি স্থাপন করবে
সােভিয়েত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধে মন্তব্য
মস্কো, ১৯ এপ্রিল-ফরাসী সংবাদপত্র লে মন্দে থেকে সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবশালী সাপ্তাহিক ‘জা রুবিশন’-এ পুনর্মুদ্রিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে যে, পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা সগ্রাম আরাে দৃঢ়তর ভিত্তি স্থাপন করবে।
আজ ‘প্যাট্রিয়টে প্রকাশিত ঐ পুনমুদ্রিত প্রবন্ধের উদ্ধৃত একটি পরিচ্ছেদে বলা হয়েছে ঢাকায় সাংঘাতিক ভুল করার পর পশ্চিম পাকিস্তানীরা কিভাবে বাঙালীদের কাছে আরাে কম তিক্ত মনােভাবের আশা করে তা বােঝা দুস্কর।”
বিপরীতদিকে এই সম্ভাবনাই প্রবল যে হিংসার প্রতি প্রবণতার প্রসার ঘটবে এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম আরাে দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করবে।” ‘বাংলা দেশ’ ঘােষণার প্রাক্ মুহূর্তে প্রবন্ধটির পুনর্মুদ্রণ যদিও কোন মন্তব্য করা হয় নি এবং সরকারী নীতির কথা এতে বলা না হলেও, প্রবন্ধটি এখানে বিপুল কূটনৈতিক কৌতুহলের সঞ্চার করেছে।
ভুট্টোকে ভৎসনা
‘যা রুবিসন’-এর ঐ প্রবন্ধে শেখ মুজিবরের প্রতি শ্রদ্ধা জানান হয়েছে এবং শ্রীজুলফিকার আলি ভুট্টো যিনি সামরিক কার্যকলাপের নিন্দা তাে করেনই নি উপরন্তু বাস্তবে ঐ কার্যকলাপের প্রশংসা করার জন্য তাঁর ক্ষতিকর ভূমিকার সমালােচনা করা হয়েছে। প্রবন্ধটি বলা হয়েছে, শ্রীমুজিব বস্তুত পক্ষে স্বাধীনতার দাবি জানান নি এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি একটি মীমাংসার আশায় স্বায়ত্তশাসনের দাবি দিয়ে সামরিক শাসকদের সঙ্গে আলােচনা চালান।
প্রবন্ধে আরাে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতারা সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত না থাকলেও বাঙ্গালীরা সংগ্রামের সুন্দর মেজাজ দেখিয়েছেন। শহরের মধ্যবিত্তশ্রেণী থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতারা পূর্বে অহিংস আন্দোলনের কথাই ভেবেছেন এবং রাজনৈতিক আলােচনার সময় তারা তাদের কর্মীদের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন।
“এমনকি অহিংস প্রতিরােধ আন্দোলনেও কর্তৃপক্ষ ভয় বিহ্বল হয়ে সামরিক আইন জারি করত। বিশেষত বর্ষাকালে শহর অপেক্ষা গ্রামাঞ্চলে সামরিক বাহিনীকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে আরাে বেগ পেতে হবে বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ২১.৪.১৯৭১