পাক বর্বরতার প্রতিবাদে সােভিয়েতের শহরে শহরে সভা-সমাবেশ
পত্র-পত্রিকাগুলিও বাঙলাদেশের পক্ষে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করছে
মস্কো, ৭ অক্টোবর-বাঙলাদেশের নিরস্ত্র মানুষ, রাজনৈতিক ও গণ-আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের উপর পাকিস্তানী সামরিক সরকার যে ব্যাপক অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে সােভিয়েত জনগণ ও পত্র-পত্রিকাগুলি তার প্রতিবাদে আরও বেশি সােচ্চার হয়ে উঠছে। | এ-পি জানাচ্ছে, সােভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘প্রাভদা’ ‘লক্ষ মানুষের ট্রাজেডি’ শীর্ষক নিবন্ধে অভিযােগ করেছে যে বাঙলাদেশ ছেড়ে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী ভারতে চলে আসার জন্য পাক কর্তৃপক্ষই দায়ী।
সােভিয়েত সংবাদ সংস্থা তাস খবর দিয়েছে, মস্কো, লেনিনগ্রাদ, মিনস্ক, রিগা সহ অন্যান্য বহু শহরে ইয়াহিয়া শাহীর অত্যাচারের প্রতিবাদে সভাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
নয়াদিল্লী থেকে ইউ এন আই বলেছে,বাঙলাদেশে ইসলামাবাদের শাসকচক্রের কার্যাবলী প্রাভদা এবং বিভিন্ন সােভিয়েত ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যে ক্রোধ ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
লেনিনগ্রাদের শ্রমিকরাও বাঙলাদেশের শান্তিপূর্ণ মানুষের উপর গণ-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সােচ্চার মত প্রকাশ করেছেন।
তঁারা শরণার্থীদের ঘরে ফিরে যাবার অনুরূপ পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন।
বাইলােরুশিয়ার রাজধানী মিনস্ক-এ একটি গৃহনির্মাণ কারখানার শ্রমিক সভায় অত্যাচারের সমাপ্তি ও শেখ মুজিবর রহমানের মুক্তি দাবি করা হয়েছে।
স্মরণ থাকে যে, সােভিয়েত ইউনিয়নের মহিলা সমিতি, শ্রমিক সংগঠন এবং শান্তি কমিটি ইতােমধ্যেই বাঙলাদেশের জনগণের ইচ্ছে, অধিকার ও ন্যায়সঙ্গত স্বার্থের প্রতি যথােচিত মর্যাদা দিয়ে বাঙলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান দাবি করছে। সংগঠনগুলি ইয়াহিয়াকে প্রতিশােধ গ্রহণের পথ ত্যাগ করার উপদেশ দিয়েছে এবং বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান সহ সমস্ত জনপ্রিয় নেতাদের উপর প্রতিহিংসা গ্রহণ বন্ধের দাবি করেছে।
এ পি মন্তব্য করেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মস্কো সফর এর জন্য বহুলাংশে দায়ী।
উল্লেখযােগ্য যে, প্রধানমন্ত্রীর সফরান্তে ভারত-সােভিয়েত যুক্ত বিবৃতি এবং নয়াদিল্লীতে গত ১ অক্টোবর সােভিয়েত রাষ্ট্রপতি নিকোলাই পদগর্নির বক্তব্যে বাঙলাদেশে রাজনৈতিক সমাধানের ইতিবাচক প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সূত্র: কালান্তর, ৮.১০.১৯৭১