মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতে
পূর্ববঙ্গে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকলে তা উদ্বেগজনক
ওয়াশিংটন, ৮ এপ্রিল—গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শ্রীচার্লস ব্রে বলেছেন, পাকিস্তানকে যেসব মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র দেওয়া হয়েছে সেগুলি তারা বাঙলাদেশের জনগণকে দমন করার ব্যাপারে ব্যবহার করছে এমন কোন প্রত্যক্ষ প্রমাণ” মার্কিনীরা পায়নি, কিন্তু যদি সেগুলি ব্যবহৃত হয়ে থাকে তাহলে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন’ করবে।
মার্কিন সাহায্য লাভের জন্য আওয়ামী লীগের কোন কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে এসেছেন কি না এ সংবাদ সম্পর্কে তিনি হঁ্যা বা না কোন কিছুই বলতে পারেন নি।
ইউ এন আই জানিয়েছে গতকাল একদিনের জন্য দিল্লীতে অবস্থান কালে মার্কিন সিনেটের একজন নেতৃস্থানীয় রিপাব্লিকান সদস্য সিনেটার উইলিয়াম স্যাক্সবে বলেছেন যে, পূর্ববঙ্গে পাকিস্তান নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র প্রয়ােগ করেছে এটা জেনে তিনি তার নিন্দা করছেন। তিনি বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি খুবই আশঙ্কাবােধ করেছেন এবং এটাও তিনি জানেন যে, তাদের দেশের সরকার এখনও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি; তবে মার্কিন সরকারের কর্তব্য হবে, পাকিস্তানের এই আচরণকে নিন্দা করা।
এবারে নিক্সনের চিঠির সুর চড়া?
নয়াদিল্লী, ৩০ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সনের চিঠির সুরটা এবারে কিছু চড়া। ইউ এন আই বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বলে অভিযােগ করেছেন যে, ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের প্রশ্নে তিনি “ক্রমেই বেশি বেশি আপসহীন মনােভাব গ্রহণ করছেন। তার এই বক্তব্যের পক্ষে তিনি পশ্চিমের দেশগুলির সাংবাদিকদের লেখা সংবাদের ওপর গুরুত্ব আরােপ করেছেন। ঐসব সংবাদে মুক্তিবাহিনীকে ভারত সাহায্য দিচ্ছে এ বিষয়ের উল্লেখ আছে।
নিক্সন আবার ভারতকে সংযম অবলম্বন করতে এবং উভয় দেশকেই সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে বলেছেন।
ভারতস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ কিটিং এই চিটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেন। আজ মন্ত্রিসভার রাজনীতি বিষয়ক কমিটিতে এর আলােচনা হয়। জানা গেছে, আগামীকাল এর জবাব পাঠানাে হবে এবং সে জবাবে নিক্সনের প্রস্তাব যে প্রত্যাখ্যাত হবে সে বিষয়ে কোনাে সন্দেহ নেই।
ইয়াহিয়াও চিঠি পেয়েছেন
ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর লিখিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের একটি চিঠি আজ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পেয়েছেন। রেডিও পাকিস্তান থেকে প্রচারিত এই সংবাদে অবশ্য বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
পাকিস্তানের সামরিক সদর দপ্তর থেকে এক নির্দেশ জারি করে বলা হয়েছে, দেশের লরির মালিকরা যেন অবিলম্বে তাদের গাড়িগুলি প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করার জন্য জমা দেয়। রেডিও পাকিস্তান এই খবরটি দিয়ে বলেছে, এ ব্যাপারে লরির মালিকরা যেন সামরিক সদর দপ্তরের সঙ্গে যােগাযােগ করে।
সূত্র: কালান্তর, ১.১২.১৯৭১