নিরাপত্তা পরিষদে সােভিয়েত বাধাদানে পাকিস্তান মিত্রগােষ্ঠীর সব চক্রান্ত ব্যর্থ
এবার অস্ত্র সংবরণ প্রস্তাব নিয়ে সাধারণ পরিষদে ধরনা
জাতিসংঘ, ৭ ডিসেম্বর-সােভিয়েত ইউনিয়নের সক্রিয় বাধাদানে নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান মিত্রগােষ্ঠীর অস্ত্র-সংবরণ প্রস্তাব সহ সব রকম প্রচেষ্টা পুরােপুরি ব্যর্থ হয়ে যাবার পর তারা বিষয়টিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের দরবারে নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছে। গতরাত্রে নিরাপত্তা পরিষদে ঐ মর্মে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবটি উত্থাপক ছিল সােমালিয়া নয়া প্রচেষ্টার অন্যতম সমর্থক ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবাদ এপির।
উল্লেখযােগ্য বিষয়, আক্রমণকারী পাকিস্তান ও আক্রান্ত ভারতবর্ষকে এক তুলাদণ্ডে রেখে গত দু’দিন পর পর দুটি অস্ত্র সংবরণ প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত হয়েছিল। পাকিস্তানের কোলঘেঁষা ঐ প্রস্তাবের পিছনে ছিল… তিনি অস্ত্র সংবরণ প্রস্তাবের সঙ্গে ঐ দাবিটি যুদ্ধ করে একটি সংশােধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে বলেন।
নয়া প্রস্তাবের পাঁচটি উত্থাপক দেশের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখছিলেন ইতালিয় দূত পিয়েরাে ভিসি। সােভিয়েতের ভেটো দানের হুমকি এবং নতুন সংশােধনীর মুখে বেগতিক দেখে ইতালির প্রতিনিধি তার খসড়া প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেন।
১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদে আর প্রস্তাব তুলে লাভ নেই দেখে পাকিস্তানের মিত্র গােষ্ঠী তখন ১৩১ সদস্যবিশিষ্ট সাধারণ পরিষদ অস্ত্র সংবরণের প্রস্তাবটি আলােচনার্থে নিয়ে আসে। সােমালিয়ার প্রস্তাবে ১১টি দেশ ভােট দেয়। ৪টি দেশ ভােটদানে বিরত থাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সাধারণ পরিষদে ঐ প্রস্তাবটি সম্পর্কে আলােচনা হবার কথা। উল্লেখযােগ্য, সাধারণ পরিষদে ভেটোর ভয় নেই জেনেই পাক-মিত্রগােষ্ঠী এ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সিদ্ধান্ত সদস্য দেশগুলি মানতে বাধ্য। কিন্তু সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত মানা বা না-মানা সদস্য দেশগুলির ওপর বর্তায় না।
সােমালিয়ার প্রস্তাবটি শান্তির জন্য এক হওয়া পদ্ধতির আওতায় পড়ে। বিগত বিশ বছরে মাত্র ৫টি বিষয় এই পদ্ধতির আওতায় পড়ছিল। ১৯৬৭ তে পশ্চিম এশিয়া যুদ্ধকালে এই পদ্ধতির প্রয়ােগ করে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। গৃহীত প্রস্তাব অবশ্য ইস্রায়েল মানে নি।
সূত্র: কালান্তর, ৯.১২.১৯৭১