মুক্তিসেনারা
৪টি পাকিস্তানী ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে
আগরতলা, ১৬ এপ্রিল (ইউ এন আই)-মুক্তিফৌজ সৈয়দপুরের ১০ মাইল দূরবর্তী রানী বন্দরের নিকটে ৪টি পাকিস্তানী ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে। ঠাকুরগাও ও দিনাজপুর জেলার অন্যান্য অঞ্চল থেকে বহু উদ্বাস্তু সীমান্ত পার হয়ে আসছে।
কুষ্টিয়ার পতনের পর দেখা যাচ্ছে যে, পাক বাহিনী বরিশাল থেকে শুরু করে দিনাজপুর পর্যন্ত অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ শহরই দখল করে নিয়েছে।
চাল সকালে যশাের জেলার বহু অঞ্চলে ভারী গােলাবর্ষণের আওয়াজ পাওয়া গেছে। ফলে সীমান্তবর্তী বহু উদ্বাস্তু ভারতে চলে আসছে। এক ছাত্রনেতা জানিয়েছেন যে, তারা অনেক ভারী অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করেছেন বটে কিন্তু সেগুলি ব্যবহার করার মত তাদের কোন বিশেষজ্ঞ নেই।
গতকাল বাংলাদেশের সদর দপ্তর কিষণাগঞ্জে আগত উদ্বাস্তুদের খবরে জানা গেল যে, দিনাজপুর জেলার মহকুমা শহর ঠাকুরগাঁও পাক-বাহিনীর কবলিত হয়েছে।
ইতিপূর্বে মুক্তিফৌজ দিনাজপুর শহর ছেড়ে এসেছে। উদ্বাস্তুরা আরও বলেছেন যে, সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে পাক বাহিনী প্রতিরােধ ব্যবস্থাগুলিকে ভেঙে দিয়েছে এবং ভারত সীমানার দিকে এগােচ্ছে।
ঘােষণা করেছে যে, বরিশাল, পটুয়াখালি, ফরিদপুর ও খুলনার জেলাগুলি নিয়ে গঠিত অঞ্চলটির কমাণ্ডার হলেন মেজর এম, এ, জলিল।
মেজর কিউ, এন জামানকে শ্রীহট্ট অঞ্চলের কমান্ডার করার কথা পূর্বেই ঘােষিত হয়েছে।
গত ১৫ দিনে ৫০০০ উদ্বাস্তু আসামের কাছাড় জেলার করিমগঞ্জ মহকুমায় গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। প্রতিদিনই বহু লােক সীমানা পার হয়ে আসছেন। আসাম সরকার তাদের সাহায্য দানের জন্য শিবির খুলেছেন।
ত্রিপুরার চীফ সেক্রেটারী জানিয়েছেন যে, প্রায় ১০ হাজার উদ্বাস্তু বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এসেছেন।
৮ জন পাখতুন সৈন্য হত্যা
কুমিল্লা শহরে নিরস্ত্র নাগরিকের উপর গুলি করতে অস্বীকার করায় ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ৮ জন পাখতুন সৈন্যকে পাক-বাহিনী হত্যা করেছে বলে স্বাধীন বাঙলা বেতার কেন্দ্র সংবাদ দিয়েছে।
ক্যাপ্টেনটিকে তার নিজ গৃহে পরিবারবর্গের সামনেই হত্যা করা হয়েছে।
উক্ত বেতার কেন্দ্র আরও বলেছে যে, ময়মনামতিতে কুমিল্লা অঞ্চলের পাক বাহিনীর এক লেঃ কর্ণেলকে গুলি করে মারা হয়েছে। পাখতুন সৈন্যদের হাতে সে মারা যায়।
সূত্র: কালান্তর, ১৭.৪.১৯৭১