বাঙলাদেশ সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তে
কড়া প্রহরা বজায় থাকছে : জগজীবন রাম
জলন্ধর, ১৭ অক্টোবর (ইউ এন আই)-ভারতের আঞ্চলিক সংহতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যে কোন দুরভিসন্ধির উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য দেশের সীমান্ত অঞ্চলে বর্তমান সতর্ক প্রহরা বজায় থাকবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রীজগজীবন রাম আজ ঐ মন্তব্য করেছেন।
জলন্ধরের ২০ কিলােমিটার দূরে কপূরথলায় এক জনসভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঐ উক্তি করে বলেন, বাঙলাদেশ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ভারত তার সীমান্ত অঞ্চল থেকে সামরিক প্রহরা প্রত্যাহার করবে না। তিনি বলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাম্প্রতিক যুদ্ধের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই সতর্কতার প্রয়ােজন আছে।
শ্রীরাম তাঁর ভাষণে মুক্তিবাহিনীর সফলতা উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন এবং অদূর ভবিষ্যতেই বাঙলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করবে বলে সুদৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের বাঙলাদেশে মুক্তিবাহিনীর শক্তিশালী উপস্থিতির স্বীকৃতি থেকেই সেখানকার পরিস্থিতির কথা বােঝা যাবে। ভারত যুদ্ধ চায় না, কিন্তু পাকিস্তান যদি যুদ্ধ শুরু করে তবে তাকে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হবে যা তার কল্পনার বাইরে।
‘ভারত মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্র সজ্জিত করছে বলে মার্কিনী সংবাদপত্রে যে খবর বেরিয়েছে শ্রীরাম তার উল্লেখ করে বলেন, গেরিলারা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অস্ত্র সগ্রহ করছে এবং এটা মােটামুটিভাবে প্রকাশ্য যে গেরিলারা বিভিন্ন স্থান থেকে নগদ অর্থেই অস্ত্রশস্ত্র কিনছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বাঙলাদেশের পরিস্থিতির বাস্তবতাকে অস্বীকার করার জন্য পাকিস্তানের আলােচনা করেন। তিনি ঘােষণা করেন, শরণার্থীরা একদিন ঘরে ফিরবেন “তবে তা ইয়াহিয়ার পাকিস্তানে নয়-মুজিবের বাঙলাদেশে।”
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক
জলন্ধরে আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীজগজীবন রাম বলেছেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে কোন উদ্যোগকে ভারত স্বাগত জানাবে। পিকিং-এ টেবিল টেনিসের আসরে অংশগ্রহণের জন্য ভারতীয় দলের প্রস্তাবিত সফরটিকে তিনি পরিস্থিতির “স্বাগত জানানাের মত পরিবর্তন” বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, “ভারত সর্বদাই চীনের সঙ্গে উন্নততর সম্পর্ক স্থাপনের পক্ষে।”
সূত্র: কালান্তর, ১৮.১০.১৯৭১