You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.25 | | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পাকিস্তানের যুদ্ধ হুমকীর পরিপ্রেক্ষিতে
দেশের বিভিন্ন স্থানে জোরদার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

নয়াদিল্লী, ২৪ অক্টোবর-পাকিস্তানের যুদ্ধ-জিগিরের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম দেশের প্রান্তে, প্রত্যেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করা হচেছ। সীমান্তে জওয়ানরা তৈরি। স্বরাষ্ট্র দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীকে সি পন্থ গতকাল সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন, “আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনে পাকিস্তান যদি স্পর্ধা দেখায় তবে ভারত তার সমুচিত জবাব দেবে।” তিনি নয়াদিল্লীর সন্ত নিরঙ্কারী মণ্ডলীর ২৪-তম বীৰ্ষক সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। সংবাদ ইউ এন আইয়ের।
শ্রীপন্থ বলেছেন, ভারত সর্বদাই একটি শান্তিকামী দেশ। আমাদের দেশের ইতিহাস প্রমাণ করে দিয়েছে, আমরা কোন দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ রচনা করি নি।
তবে একই সঙ্গে তিনি পাকিস্তান জঙ্গী চক্রকে একথা স্মরণ করিয়ে দেন। ভারত সম্পর্কে তাদের যদি কোনাে ভুল ধারণা থেকে থাকে তবে তারা ভীষণ ভুল করবে।
তিনি জনসাধারণকে এই মর্মে হুঁশিয়ার করে দেন যে পাকিস্তান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। তাই তিনি তাদের ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে বলেন।
পাকিস্তান সৃষ্ট গুরুতর অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সন্ত আকালীদের গুরুদ্বার আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেবার অনুরােধ জানান।
কচ্ছ সীমান্ত প্রহরা সৈন্যদের হাতে
আমেদাবাদ থেকে প্রাপ্ত গতকালের এক সংবাদে জানা গেল, কচ্ছ সীমান্ত প্রহরার ভার সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাত থেকে সৈন্য বাহিনী গ্রহণ করেছে।
এখানকার সরকারী মহলের বক্তব্য, সীমান্ত পারে ক্রমবর্ধমান পাকিস্তানী সৈন্য আনাগােনার পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সীমান্ত পারের সংবাদে প্রকাশ, কচ্ছ সীমানায় পাকিস্তানী ভারী গােলন্দাজ বাহিনী মােতায়েন করেছে।
ইতােমধ্যে গুজরাটে বেসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সমগ্র রাজ্যকে বেসামরিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দিক থেকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেসব অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি অবস্থিত সেগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
গুজরাটের বেসামরিক প্রতিরক্ষা ডিরেক্টর শ্রীউদয়ন চিনুভাই বলেছেন, এই সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, তৈল অঞ্চল, শশাধনাগার, বন্দর ও বিমানক্ষেত্র ইত্যাদি কেন্দ্র বিশেষ সামরিক কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ রেলপথের ওপরও কড়া প্রহরা রয়েছে। শ্ৰীচিনুভাই আরাে জানান সমস্ত জেলা শহরে নিয়মিত নিপ্রদীপ মহড়া চলছে।

সূত্র: কালান্তর, ২৫.১০.১৯৭১