বাঙলাদেশের স্বাধীন সরকার ও মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে
কলকাতার রাজপথে এপার বাঙলার শিল্পী-সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের মিছিল
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা ২০ এপ্রিল-বাঙলাদেশের স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক সরকার ও মুক্তি সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপনের উদ্দেশে আজ বিকেলে প্রবল বর্ষণ উপেক্ষা করে এপার বাংলার শিল্পী-সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীগণ একটি মিছিল বের করেন।
এই মিছিলের পুরােভাগে ছিলেন সবশ্রী সুভাষ মুখােপাধ্যায়, বিবেকানন্দ মুখােপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, সরষু দেবী, মণীন্দ্র রায়, মনােজ বসু, ডঃ ধীরেন্দ্র নাথ গঙ্গোপাধ্যায়, নরেন্দ্র নাথ মিত্র, সাধনা রায় চৌধুরী, দক্ষিণারঞ্জন বসু, শঙ্খ ঘােষ। এছাড়া সর্বশ্রী দীপেন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিতাভ দাশগুপ্ত, নীরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, সিদ্ধেশ্বর সেন, সন্তোষ ঘােষ, তরুণ সান্যাল, চিত্ত রায়, প্রসূনবসু, ধনঞ্জয় দাশ, গণেশ বসু, রমেন আচার্য প্রমুখ বহু প্রবীণ ও নবীন লেখকবৃন্দ মিছিল অংশগ্রহণ করেন। মিছিলের উদ্যোক্তা ছিল বাংলাদেশ সহায়ক শিল্প সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী সমিতি।
চৌরঙ্গীর টাটা বিল্ডিং থেকে মিছিলটি প্রথমে কলকাতাস্থ মার্কিন বৃটিশ ও সােভিয়েত কূটনৈতিক দপ্তরে গিয়ে ঐ দেশগুলির কূটনৈতিক প্রধান সমীপে একটি সাধারণ স্মারকলিপি পেশ করে অবিলম্বে বাঙলাদেশে ইয়াহিয়ার বর্বরতা বন্ধ করার জন্য ও বাঙলাদেশের সদ্য প্রতিষ্ঠিত সরকারকে স্বীকৃতিদানের আবেদন জানায়। প্রকাশ, সােভিয়েত কন্সাল জেনারেল ঐ স্মারকলিপি সহৃদয়চিত্তে গ্রহণ করেছেন।
এরপর মিছিলটি বাঙলাদেশ কূটনৈতিক মিশনের সামনে মিশনের প্রধান জনাব এম হােসেন আলীকে অভিনন্দন জানাতে এলে জনাব ও বেগম আলী মিশনের সুউচ্চ অট্টালিকার খােলা বারান্দায় বেরিয়ে এসে বলেন, “আমরা আপনাদের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আপনারাই আমাদের ভরসা যুগিয়েছেন।”
এরপর সমবেত শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীগণ একযােগে স্বাধীন বাঙলাদেশের রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত “আমার সােনার বাঙলা” গাইতে শুরু করলে জনাব ও বেগম আলী অবিভূত হয়ে পড়েন।
সূত্র: কালান্তর, ২১.৪.১৯৭১