বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রাম ও যুগােস্লাভিয়া
যখন ইসলামাবাদ সামরিক জুতা সশস্ত্র সগ্রাম চাপিয়ে দিল বাংলাদেশের মানুষের ওপর, তখন লাখ লাখ হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টান প্রভৃতি শরণার্থীর দল এসে পৌছতে শুরু করল ভারতে। এই দিনে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র এই সগ্রামীদের প্রতি জানাল নৈতিক সমর্থন।
কিন্তু, এই সময় ভারত একা। আবার সর্ব প্রকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা করেও বাংলাদেশের সগ্রামীদের অনুকূলে পারল না কোনাে মত সৃষ্টি করতে। নিঃসঙ্গ ভারত এখন চিন্তিত। এমনি দিনে আবার দেশের অভ্যন্ত রে সু-এবং “কু” উদ্দেশ্য প্রণােদিত হয়ে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের ওপর চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এবং…।
দ্বিধাগ্রস্ত ও নিঃসঙ্গ ভারত বােধহয় সেদিন দিশেহারা। এমনি সময় মার্শাল টিটোর ভারতে আগমন। আলাপ-আলােচনা কী হয়েছে সর্ব সাধারণ জানে না। তবে এটুকু বােঝা গেল যে ভারত ও যুগােস্লাভিয়া বাংলাদেশের সগ্রামকে উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম বলে স্বীকার করেছে। আর মার্শাল টিটোর চলে যাওয়ার পর ভারতীয় বৈদেশিক দপ্তর মুখপাত্র স্বগর্বে বললে: প্রয়ােজন হলে আমরা মুক্তি বাহিনীকে সাহায্য করব।
মার্শাল টিটো এর পর গেছেন কায়রাে, ওয়াশিংটন, কানাডা, ইউ, কে প্রভৃতি স্থানে এবং সর্বত্রই মনে হয় বাংলাদেশের সমস্যা নিয়ে আলােচনাও করেছেন। ফলে মনে হয় ইন্দিরাগান্ধীর সফর একদম বিফল হয়নি।
তাছাড়া, বিশেষ করে টিটোসাদাত সাক্ষাৎ এবং আলাপ-আলােচনা মনে হয় মধ্য প্রাচ্যে কিছু অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। তানযুগ পরিবেশিত সংবাদে জানা যায়: মধ্য প্রাচ্য, পূর্ব পাকিস্তান এবং গােষ্ঠি নিরপেক্ষ কার্যাবলীই ছিল আলাপ-আলােচনার বিষয়বস্তু। পারস্পরিক বিশ্বাস ও বােঝাপড়ার পরিবেশেই কথাবার্তা হয় এবং উভয় প্রেসিডেন্ট এসব ব্যাপারে, একই মত পােষণ করেন বলে সরকারীভাবে বলা হয়েছে। তাছাড়া, সাদা ও টিটো মনে করেন যে “উত্তেজনার কারণ এবং এই উপমহাদেশের শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার কারণ উভয়ই খুঁজে পাওয়া যাবে ঐ পাকিস্তানের অভ্যন্তরে, অন্য কোথাও নয়।”
তাই মনে করি আজ প্রগতিশীল এবং কমিউনিজমে বিশ্বাসী সকলেই এই রাষ্ট্রের। ামনা করবে যেমন করবে অন্যান্য মানুষের জন্য।
সূত্র: কম্পাস, ২৭শে নভেম্বর ১৯৭১