বাঙলাদেশের মুক্তিফৌজ গেরিলা যুদ্ধ চালাচ্ছে
নয়াদিল্লীর অভিমত
নয়াদিল্লী, ২ এপ্রিল (ইউএনআই) গত ২৪ ঘণ্টা বাঙলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যদের লড়াইয়ের ধারা দেখে মনে হয় তারা প্রধান সাময়িক অঞ্চল গুলিতে পুনরায় জোটবদ্ধ হতে চলেছে নয়াদিল্লীর ইনস্টিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ এণ্ড এনালিসিজের ডিরেক্টর কর্নেল রমা রাও একথা জানিয়েছেন।
এদিকে মুক্তিফৌজ যশাের, কুষ্টিয়া এবং আর কয়েকটি শহরে নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন এবং অন্যান্য অঞ্চলগুলিতে তারা সাফল্যের সঙ্গে ঝটিকা আক্রমন চালিয়ে যাচ্ছে। কর্নেল রাও বলেছেন, যুদ্ধের প্রাথমিক স্তরে মুক্তিফৌজ বেশ কিছু নেতৃস্থানীয় কর্মী হারিয়েছেন। তারা এখন গেরিলা কায়দায় যুদ্ধ চালাচ্ছেন?
বাঙলাদেশের উত্তর ভাগের যে অঞ্চলগুলিতে পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস ঘাঁটি গেড়েছে তারই চারপাশে পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা বিমান আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং হেলিকপ্টার যােগে অবতরণ করছে। কর্নেল রাওয়ের ধারণা পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা দিনাজপুর, রংপুর এবং শ্রীহট্টতে অবাধে ঘােরাফেরা করতে পারছে না কারণ রাস্তাগুলিকে মুক্তি ফৌজের কর্মীরা নানাভাবে আটকে দিয়েছে।
ভাষ্যকার মন্তব্য করেছেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে পাকিস্তান বাহিনী সংযােগস্থলগুলিতে কজা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। বর্ষার আর মাত্র তিন-চার সপ্তাহ বাকী। জ্বালানি ও অস্ত্র-শস্ত্র অনেকটা শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই আবার মজুদ ভাণ্ডার গড়ে তােলার কাজ এ সময়ের মধ্যেই করতে হবে। অথচ বিমানযােগে বিরাট পথ ঘুরে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আসা খুব সহজ কাজ নয়। অথচ বর্ষাকালে লড়াইয়ের গতি প্রকৃতি নির্ভর। করছে পাকিস্তান থেকে অস্ত্রশস্ত্র আসার উপর।
এছাড়া আগামী কদিনে পাকিস্তানী সৈন্যরা মুক্তিফৌজের নেতৃস্থানীয় কর্মীদের খতম করার চেষ্টাও করবেন।
সূত্র: কালান্তর, ৪.৪.১৯৭১