You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.04 | বাঙলাদেশের গ্রামে গ্রামে সুসংগঠিত গেরিলা বাহিনী গড়ার জন্য ন্যাপের নির্দেশ | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশের গ্রামে গ্রামে সুসংগঠিত গেরিলা বাহিনী গড়ার জন্য ন্যাপের নির্দেশ
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ২ এপ্রিল বাঙলাদেশের (পূর্ববাঙলা) প্রতিটি গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সুসংগঠিত গেরিলা দল তৈরি করার জন্য ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ (ওয়ালী গ্রুপ) আহ্বান জানিয়েছে। আজ কলকাতায় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ওয়ালী গ্রুপ) জনৈক প্রাদেশিক নেতা এই সংবাদ জানিয়ে বাঙলাদেশের বর্তমান যুদ্ধের অবস্থার বর্ণনা করেন। তিনি জানান শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে বাঙলাদেশে ইয়াহিয়া বিরুদ্ধে, সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যে ব্যাপক অসহযােগ আন্দোলন হয়েছিল তার ব্যাপকতা ভাষা বর্ণনা করা কঠিন। এ ধরণের অসহযােগ আন্দোলন গান্ধিজীর নেতৃত্বে যুক্ত ভারত কখনও হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। ঐ রাজ্যের মুখ্য সরকারী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দপ্তরের পিওন এবং সাধারণ মানুষ এই অসহযােগ আন্দোলন সামিল ছিলেন। তিনি বলেন একচেটিয়া পুঁজির বাহক ইয়াহিয়া তাই মরিয়া হয়ে সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, এই নৃশংসভাবে খুন করেছে। তিনি বলেন, বাঙলাদেশের মানুষ তারা যখন গণতন্ত্র আর স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র সংগ্রাম আর স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেছেন ন্যাপনেতা বলেন, ইয়াহিয়া সৈন্য বাহিনী এখন মরিয়া হয়ে আক্রমণ করছে। পােড়ামাটির নীতি গ্রহণ করেছে। বহু খাদ্যগুদামে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
ন্যাপ নেতা বলেন, “বাঙলাদেশের সাড়ে সাতকোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং শত্রু সৈন্যের মােকাবিলায় লড়ছে। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ বেশ কিছুদিন লাগবে। তাই সমস্ত মানুষকে এখন সংগঠিত হয়ে এই যুদ্ধে নামতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান গ্রামে গ্রামে এখন মুক্তিবাহিনীর সুসংগঠিত গেরিলাদল জারি করতে হবে এবং কৃষকদেরই এতে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। শ্রমিক ও ছাত্রদের এই গেরিলাদল তৈরিতে যথাযােগ্য ভূমিকা গ্রহণের জন্য ন্যাপ আহ্বান নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করছেন।
প্রতিটি স্থানে সকলের উদ্যোগে বিলম্বে সংগ্রাম পরিষদ গঠনের ন্যাপ সকলকে আহ্বান করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। ন্যাপ নেতা জানান, বাঙলাদেশের যুদ্ধে ন্যাপ, আওয়ামী লীগসহ সমস্ত প্রগতিশীল দল অংশ নিয়েছেন। বাঙলাদেশের এই যুদ্ধে ই,পি,আর, মােজাহেদ ও আনসার বাহিনী ও সৈন্যবাহিনীর অধিকাংশের উল্লেখযােগ্য ভূমিকার তিনি প্রশংসা করেন।
বাঙলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের যুদ্ধে প্রয়ােজনীয় অস্ত্র ও অন্যান্য সাহায্যের আবেদন নিয়ে ন্যাপ নেতা এখানে এসেছেন।

সূত্র: কালান্তর, ৪.৪.১৯৭১