যশােরে পাকসেনাদের মরীয়া লড়াই
(সীমান্ত থেকে স্টাফ রিপাের্টার)
বনগাঁ, ৫ এপ্রিল যশােহর শহরের তিন মাইল দূরবর্তী ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও হয়ে থাকা ইয়াহিয়া ফৌজ গতকাল শেষ রাত থেকে মরিয়া হয়ে অভিযান চালিয়েছে যশােহর-খুলনা রােড দখল করে যশােহর শহরটিকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘিরে ফেলবার জন্য।
প্রচণ্ড কামানের গােলাবর্ষণের আড়াল নিয়ে গতরাতে ইয়াহিয়া ফৌজ ঝিকরগাছা ও যশাের শহরের মধ্যবর্তী ফলের হাটে কৃষি অফিসটি দখল করেছে। এখন তার আশেপাশে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ইয়াহিয়া ফৌজের হাতাহাতি লড়াই চলেছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়াহিয়া ফৌজ ফলের হাট থেকে যশােহরের পূর্বদিকে রাজারহাট পর্যন্ত একটি বেস্টনী রচনা করে একদিকে যশােহর শহরটি ঘিরে ফেলতে, অন্যদিকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে যশােহর খুলনা রােডের সংযােজক পূর্ব দিকের রাস্তাটি মুক্ত করতে চায় যাতে খুলনার চালনা বন্দরের সঙ্গে অনায়াস যােগসূত্র স্থাপন করা যায়। চালনা বন্দরের দিকে ফৌজী ইয়াহিয়া সরকারের জাহাজ বােঝাই রসদ আসছে। বলে জানা গেল।
প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যেতে পারে যে, যশােহর শহরটি মুজিব অনুগামী ইপিআর-এর দখলে রয়েছে। ইয়াহিয়া বাহিনীর পরিকল্পনা সফল হলে ইপিআর মুক্তিবাহিনী ঘেরা বন্দী পড়ে পড়বে।
বাঙলাদেশের মুক্তিবাহিনী যশােহর শহরের এই আপাত বিপদ সম্পর্কে সচেতন থেকেই পাল্টা অভিযান শুরু করেছেন। মুক্তিফৌজের সৈন্যরা হাতাহাতি লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে ইয়াহিয়া ফৌজের অগ্রসর বাহিনীটিকে পাল্টা ঘেরাও করার জন্য আক্রমণ শুরু করেছেন।
আগামী কয়েকদিন যশােহর রণাঙ্গন এই অভিযান পাল্টা অভিযানের শেষ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হবে বলে সমর বিশারদরা মনে করছেন।
সূত্র: কালান্তর, ৬.৪.১৯৭১