মুক্তিযােদ্ধাদের হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গন থেকে পাকসেনা প্রত্যাহার
মুজিবনগর, ১৭ জুন (ইউএনআই) গত সাত দিনে চট্টগ্রাম রণাঙ্গনে প্রায় ১৫০ জন পাক-হানাদার মুক্তিফৌজের গেরিলাদের হাতে নিহত হয়েছে এবং বহু স্থান থেকে পাকসৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে স্বাধীন বাঙলা বেতার কেন্দ্র জানিয়েছে। সমগ্র পূর্ব রণাঙ্গনে গেরিলাদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কক্সবাজারে বহু পাক সেনা হতাহত হয়েছে।
ফকিরহাট, সিদরহাট এবং জোয়ারগঞ্জ এলাকায় পাকসেনাদের ঘাটির উপর গেরিলারা আক্রমণ করেছে।
উত্তর রণাঙ্গনের লালমনির হাট এলাকায় গেরিলাদের অতর্কিত আক্রমণে তিনটি পাক সীমান্ত ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। ভুরঙ্গামারী এলাকায় গেরিলাদের সঙ্গে মুখােমুখি সংঘর্ষে তিনজন পাক হানাদার নিহত হয়েছে
বেতার কেন্দ্র আরাে জানিয়েছে যে গেরিলাদের তৎপরতায় ভীত পাকসেনারা পচাগড় এলাকায় ব্যাপক টহল দেওয়া শুরু করেছে। এখানে গেরিলারা একটি সেতু এবং বৈদ্যুতিক যােগাযােগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছেন।
ঢালু এলাকায় গত ১৩ জুন উভয় পক্ষে তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। চট্টগ্রাম সেক্টরের রামগড় এলাকাতেও গেরিলাদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
যশাের রণাঙ্গনের মেহেরপুর থানার বারােণাতে মুক্তিফৌজের হাতে ১২ জন পাকসেনা নিহত হয়েছেন বলে রাণাঘাট থেকে ইউএনআই জানিয়েছে।
কুষ্টিয়াতে
কুষ্টিয়া জেলায় গেরিলারা পাকবাহিনীর উপর নবােদ্যমে আক্রমণ শুরু করেছে।
কৃষ্ণনগর থেকে ইউএনআই প্রেরিত এক সংবাদে প্রকাশ, কাশীপুর সীমান্ত ঘাটি এলাকার গেরিলা বাহিনী পাকসেনাদের মধ্যে ৩০ ঘণ্টা মুখােমুখি সংঘর্ষে পাকসেনারা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। প্রচুর হানাদার সৈন্য হতাহত হয়েছে।
কুমিল্লা রণাঙ্গণে
গত ১৫ জুন মুক্তিফৌজ কুমিল্লা সেক্টরের উরিচং থানায় অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে কমপক্ষে ৮ জন পাকসেনাকে খতম করেছেন।
সিলেট রণাঙ্গনে
আগরতলা থেকে ইউএনআই আরাে জানাচ্ছে : গত তিন দিন একটানা লড়াই-এর পর সিলেট সেক্টরে মনতলা এলাকা থেকে পাকসেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ১৮.৬.১৯৭১