বাঙলাদেশে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পাক-দালাল খতম অভিযানও চলছে
মুজিবনগর, ২ জুন (ইউএনআই) গত চারদিনে বাঙলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজের গেরিলাদের তৎপরতায় বহুসংখ্যক পাক-হানাদার নিহত এবং পাকসেনাদের বহু ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
অপরদিকে গেরিলারা হানাদারদের সাহায্যকারী দালালদের খতম অভিযানও পাশাপাশি অব্যাহত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে। পাকসেনাদের যাতায়াতও যােগাযােগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাও গেরিলারা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
যশােরের একটি টহলদারী সামরিক দলকে গেরিলারা খতম করে দিয়েছেন এবং রংপুর সেক্টরের একটি পাক সীমান্ত ঘাঁটি গেরিলাদের আক্রমণে ধ্বংস হয়েছে।
উত্তর-পশ্চিম পাটনিতলায় পাকদালালদের বাড়িঘর গেরিলারা পুড়িয়ে দিয়েছেন ; চিলমারী এলাকায় কিছু দালালকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। একটি পাট গুদামে আক্রমণ চালিয়ে গেরিলা ৩ জন পাক দালালকে খতম করেছেন। শ্রীহট্ট সেক্টরে ৪ জন পাকদালাল গেরিলাদের হাতে নিহত হয়েছে।
শ্রীহট্টের উত্তর-পূর্ব এলাকায় গেরিলাদের সঙ্গে পাক-হানাদারদের এক বড় রকমের সংঘর্ষ হয়। এখানে একটি সেতু গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
আখাউড়াতে বহু পাকসেনা হতাহত হয়েছে। কুমিল্লার নিকটে টহলদারী একদল পাকসেনার উপর আক্রমণ চালিয়ে গেরিলার ৬ জন হানাদারকে খতম করেছেন। | নােয়াখালীর বজরা গ্রামের পাক-দালাল সিরাজুল হকের পুত্র সহ ৪ জন মুক্তিফৌজের আক্রমণে সম্প্রতি নিহত হয়েছে নােয়াখালী এলাকার ২টি রেলসেতুও গেরিলারা উড়িয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মুক্তিফৌজের হাতে ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে। বাজুয়া গ্রামের একটি রেল সেতুও গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছেন। দক্ষিণ সােনামারী এলাকার ২টি পাকসামরিকযান গেরিলারা ধ্বংস করেছেন। একজন অফিসার সহ প্রায় ত্রিশ জন পাকহানাদার নিহত হয়েছে। বানুয়ায় একটি জিপ ও একটি ট্রাক ধ্বংস হওয়ায় ত্রিশ জন পাকসেনা নিহত হয়েছে।
ত্রিপুরা সীমান্তে পাক অনুপ্রেবেশ
পাকসেনারা আজ ত্রিপুরা সীমান্ত অতিক্রম করে বালিগাঁওতে অনুপ্রবেশ করে বুলেট বর্ষণ করে। ওপারের পাঠালােখােলা গ্রাম থেকে পাকগােলা ভারত সীমান্তে এসে পড়েছে।
এ স্থানে মুক্তিফৌজের সঙ্গে পাকহানাদারদের এক তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি।
সূত্র: কালান্তর, ৩.৭.১৯৭১