You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.21 | বাঙলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে শতাধিক পাকসেনা হতাহত | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

বাঙলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে শতাধিক পাকসেনা হতাহত

আগরতলা, ২০ সেপ্টেম্বর (ইউএনআই)- কুমিল্লায় মীর্জাপুর মুক্তিফৌজের সঙ্গে একদল পাকিস্তনী-হানাদার বাহিনীর সঙ্গে প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। এই হানাদার বাহিনী গ্রামে লুট, অগ্নি-সংযােগ ও হত্যাকাণ্ড চালায়। মুক্তিফৌজ হানাদারদের গ্রাম থেকে হটিয়ে দেয়।
এরপর পাকসেনারা যখন তাদের প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে ফিরে যায় তখন তারা তিনবার মুক্তিফৌজের অতর্কিত আক্রমণের মুখে পড়ে যায়। উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। ফলে ১৪ জন পাকসেনা নিহত ও ৬ জন আহত হয়।
কুমিল্লা সেক্টরের দেলালপুর এবং রণুরামপুরে মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা যােদ্ধারা পাকসেনাদের ঘেরাও করে এবং তাদের উপর আক্রমণ চালায়। এই সঘর্ষ বহু পাকসেনা হতাহত হয়। কুমিল্লা লক্ষীপুর রােড এলাকায় মুক্তিফৌজ এক অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে শত্রুপক্ষের তিনটি বাঙ্কার দখল করে। এই সংঘর্ষে ৩ জন পাকসেনা নিহত ও ৮ জন আহত হয়। কায়ুমপুর সেক্টরে গত মঙ্গলবার মুক্তিফৌজ দুটো বাঙ্কার দখলের সময় ১১ জন পাকসেনা নিহত হয়।
এই দিনই দুটো নৌকা যােগে পাকসেনারা যখন একটি এলাকা অতিক্রম করে যাচ্ছিল তখন প্রায় এক প্ল্যাটুনের মত মুক্তিফৌজ নৌকা দুটো ঘেরাও করে ফেলে এবং আক্রমণ চালাতে থাকে। একটি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া হয় এবং আর একটি বিধ্বস্ত হয়। এই আক্রমণের ফলে ১৮ জন পাকসেনা নিহত ও ৮ জন আহত হয়।
গত ৪ দিনে কুমিল্লা ও নােয়াখালির গ্রামাঞ্চলে মুক্তিফৌজের গেরিলাযােদ্ধারা ৫৫ জন পাকসেনা হত্যা করে।
১৩ সেপ্টেম্বর আলাদা করে মুক্তিফৌজের সঙ্গে পাকসেনাদের এক প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে বহু পাকসেনা হতাহত হয়। মুক্তিযােদ্ধাদের একজন এই সংঘর্ষে মৃত্যু বরণ করেন।
নােয়াখালির পরশুরাম থানা এলাকায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিফৌজের গুলি বিনিময় চলে। ফলে ৭ জন পাকসৈন্য নিহত ও ২৩ জন আহত হয়।
ময়মনসিংহ জেলায় জীবর্দিতে মুক্তিফৌজের গেরিলাযােদ্ধারা ৪০ জন পাকসেনা খতম করে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সিলেট সেক্টরে ভােলাগঞ্জে টহলদার পাকসেনাদের উপর গেরিলারা অতর্কিতে আক্রমণ চালায় এবং ১২ জন পাকসেনা হত্যা করে। এই সঙ্গে জনৈক রাজাকার দালালও নিহত হয়।

সূত্র: কালান্তর, ২১.৯.১৯৭১