পাক অধিকৃত এলাকায় মুক্তিফৌজের দুর্ধর্ষ আক্রমণ
(স্টাফ রিপাের্টার)
সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া খবরে প্রকাশ, ঢাকায় মুক্তিযােদ্ধারা ব্যাপক গেরিলাযুদ্ধ চালিয়ে পাকসেনাদের বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্রের খবরে প্রকাশ, মুক্তিবাহিনী ফেনীর কাছে মৌহারীগঞ্জ রেল স্টেশনে পাকফৌজ ভর্তি একটি ট্রেন উড়িয়ে দিয়েছে। শ্রীপুর পুলিশ থানা এখন মুক্তিবাহিনীর দখলে।
বাঙলাদেশ কমিউনিসট পার্টির সাপ্তাহিক মুখ পত্র “মুক্তিযুদ্ধ থেকে জানা যায়, শ্রীহট্ট জেলার অন্তর্গত মৌলভী বাজার মহকুমায় বিভিন্ন স্থানের মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টির আরও তিনজন সমর্থক শহীদ হয়েছেন। ঐ সূত্রে প্রকাশ, বিয়ানীবাজার থানা ন্যাপের সহ-সভাপতি আবদুল খালেক সম্প্রতি পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন এবং পরে তাকে পিটিয়ে মারা হয়। ঐ সূত্রে আরও জানা যায় লালমনির হাট থানার টোগরাইহাট অঞ্চলে জনৈক পাকসেনা ক্যারিলীন শাড়ি পড়লে গ্রামবাসীরা তাকে ধরে ফেলে। এখন ঐ সেনা মুক্তিবাহিনীর হেফাজতে।
ইউ,এন,আই জানাচ্ছে গত ৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেলার পাক অধিকৃত নারা থানায় মুক্তিফৌজ এক দুর্ধর্ষ আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণের ফলে ১ জন পাকিস্তানী পুলিশ অফিসার, ৩ জন পুলিশ, এবং ৬ জন রাজাকার নিহত হয়।
মুক্তিফৌজের গেরিলারা থানাটি পুড়িয়ে দেয় এবং অস্ত্রশস্ত্র ও বেতার যন্ত্র দখল করে।
রংপুর সেক্টরে হাতিবান্ধার কাছে মুক্তিযােদ্ধারা অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে ৩ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। সেইদিনই এই সেক্টরে আরও ৭ জন রাজাকার নিহত হয়।
শ্রীহট্ট সেক্টরে গেরিলারা জয়ন্তয়াপুর থানায় একজন পুলিশ অফিসার এবং একজন কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে।
ঢাকা ময়মনসিংহ সেক্টরে গেরিলা যােদ্ধারা উপর্যুপরি অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে পাকসেনাদের ব্যতিব্যস্ত করে তুলে। টাঙ্গাইলের দক্ষিণে গেরিলারা সেনাবাহিনীর দুটো নৌকা ঘায়েল করার জন্য গােপনে অবস্থান করতে থাকে এবং অতর্কিত আক্রমণ করে ৬ জন পাকসেনাকে হত্যা করে।
সূত্র: কালান্তর, ১০.৯.১৯৭১