মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পাকসেনার মনােবল ভেঙে পড়ছে
আগরতলা, ৪ সেপ্টেম্বর (ইউএনআই)- বাঙলাদেশের মুক্তিবাহিনীর উত্তরােত্তর আক্রমণের মুখে পাক হানাদার বাহিনীর মনােবল ভেঙে পড়ছে। তারা বেপরােয়া হয়ে আবার গ্রামগুলিতে আগুন লাগাচ্ছে, ফলে নতুন করে শরণার্থী আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মুক্তিবাহিনী বাঙলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাকসেনা, রাজাকার ইত্যাদি হত্যায় সাফল্য লাভ করেছে। রংপুর সেক্টরে গেরিলারা গত কদিনে চিলাহাটি ও দেবীগঞ্জ অঞ্চলে রাস্তার সেতুগুলি উড়িয়ে দিয়েছে। মুক্তিসেনা সিরাজগঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিমে রেল-লাইন তুলে ও সেতু ধ্বংস করেছে। তারা আবার ভুরুঙ্গামারীতে তাদের শক্তি সমন্বয় ঘটিয়েছে। গত ২৭ আগস্ট এই ভুরুঙ্গামারীতে শত্রু সৈন্যের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। গত ৩০ আগস্ট দিনাজপুর অঞ্চলে গেরিলা বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে একজন পাকসেনা খতমও অন্য দু’জন আহত হয়।
শ্রীহট্ট সেক্টরে ২৬ আগস্ট মুক্তিসেনারা ৪ জন পাকসেনাকে খতম ও আধ ডজনকে আহত করেছে। ফেনী বাজারে হঠাৎ গেরিলারা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্ততঃ ২ জন সেনা ও ৪ জন রাজাকারকে হত্যা করেছে। এখানে একটি সেতুও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিবাহিনী এক সংঘর্ষে আরও ২ জনকে নিহত ও অনেককে আহত করার পর খানসেনারা পালিয়ে যায়। মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে রাস্তা, কালভার্ট ও টেলিফোন যােগাযােগ ধ্বংস করা হয়।
শ্রীহট্টের ফিরাই বাজারে গত ২৮ আগস্ট ৬ জন রাজাকারকে হত্যা করার পর ৪ জন রাজাকার, ২ জন মুজাহিদ ও ১৬ জন বাঙালী যাদের রাজাকার হতে বাধ্য করা হয়েছিল, তারা মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
সূত্র: কালান্তর, ৫.৯.১৯৭১