গতমাসে বাঙলাদেশে গেরিলাদের ২৫০০টি সংগঠিত আক্রমণ
মুজিবনগর, ৬ অক্টোবর (ইউএনআই) গতকাল এক মাসে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা পাকঘাটি ও টহলদার পাকসেনাদের উপর ২৫০০টি আক্রমণ ও মাইন আক্রমণ সংগঠিত করেন। এর ফলে ২২ জন অফিসার সহ ২,৬৩৩ জন রাজাকার পাকসেনা এবং ২২১৬ জন রাজাকার বদরবাহিনীর আধা সামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে এক ‘যুদ্ধ বুলেটিন’ মারফৎ আজ এই সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে।
ঐ সময়ের মধ্যে গেরিলারা মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৪৯টি শক্ত জীপ ও ট্রাককে ক্ষতি বা ধ্বংস করেছেন। ৯টি ক্ষেত্রে ট্রেন লাইনচ্যুত বা ধ্বংস হয়েছে।
মুক্তিবাহিনীর মেরিন কমান্ডোদের দ্বারা চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দরে ৩টি বড় জাহাজ এবং ১টি ট্রাঙ্কার ডুবে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটি বড় স্টীমার, এগারটি লঞ্চ এবং বহু সৈন্যবাহী নৌকা গেরিলা তৎপরতায় হয় ক্ষতিগ্রস্ত নয়তাে ডুবে গেছে।
৯৩টি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, রেলসেতু এবং কালর্ভাট ধ্বংস হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে রেল ও টেলিযােগাযােগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
গত এক মাসে ৪ শ’ রাজাকার অস্ত্রসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পনে বাধ্য হয়েছে এবং গেরিলারা ৯১৮টি রাইফেল দখল করেছেন।
যুদ্ধ বুলেটিনে আরাে বলা হয়েছে যে গত ২৯ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলায় পাঠান ও বালুচ সেনাদের মধ্যে এক সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ক্ষতিসাধন হয়েছে।
যুদ্ধ বুলেটিনে বিস্তারিতভাবে বিভিন্ন রণাঙ্গনের এক মাসের খতিয়ানও পরিবেশন করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া যশাের ও খুলনা রণাঙ্গনে
খুলনা জেলার দামুরদহে পাকঘাটির উপর আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ৯ জন পাকসেনাকে খতম করেছেন।
পাঠান ও বালুচ সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষে মােট ২০ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা-কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম রণাঙ্গনে
গত ১ অক্টোবর কুমিল্লা জেলার মুন্সিরহাটে পাক ঘাঁটির উপর আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ৪ জন শক্রসেনাকে খতম করেছে। ঐদিনে নােয়াখালি জেলার ফুলগাজী এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে গেরিলারা ২ জন পাকসেনা খতম করেছেন।
সূত্র: কালান্তর, ৭.১০.১৯৭১