যশাের শহর অবরােধ চলছে নাভারণ, জীবননগর, সারশা ও বগাচরা পাক কবলমুক্ত
(স্টাফ রিপাের্টার প্রেরিত)
মুজিবনগর ২৮ নভেম্বর- বাঙলাদেশের মুক্তিবাহিনী গত রাতে দিনাজপুর জেলার সামরিক গুরুত্বপূর্ণ থানা শহর পচাগড়ের উপরে পাকসেনাদের আক্রমণকে প্রতিহত করে শহর ও তার সংলগ্ন এলাকায় তাদের অবস্থানকে আরাে সংহত করেছে। ২৬ নভেম্বর এই জেলারই ব্ৰক্ষ্মপুরা পাক কবলমুক্ত হয়েছে। বাঙলাদেশ মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে প্রকাশিত বুলেটিনে উপরােক্ত সংবাদ জানিয়ে আরাে বলা হয়েছে যে, যশাের ও কুষ্টিয়া জেলায় মুক্তিবাহিনী জীবননগর, বগাচরা, সারশা ও নাভারণ এলাকা মুক্ত করেছে এবং যশাের শহর অবরােধ করে রেখেছে। রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রও স্বীকার করেছে যে, জীবননগরে লড়াই চলছে। গত ২৫ নভেম্বর কুমিল্লা জেলার কাইদপুর, কাশিমপুরে একাধিক সংঘর্ষে ৪ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছে। খুলনা জেলার রাজাপুর, মাল্লা, রঘুনাথপুর, গাবজা ও নবতকাটি থেকে পাক ফৌজ বিতাড়িত হয়েছে। রংপুর জেলার উত্তরাংশে মুক্তিবাহিনী তাদের অবস্থান সংহত করার পর এখন শত্রু যােগাযােগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করায় তৎপর। দোমার ও বিলহাটির মধ্যবর্তী সেতু উড়িয়ে দিয়েছেন, পারলিয়া ও ভাে…মারির মধ্যবর্তী রেলপথের একাংশ বিধ্বস্ত করেছেন, কাকিনার পূর্বদিকে তিস্তা ও মহেন্দ্র নগরের মধ্যবর্তী রেলপথের গুরুতর ক্ষতিসাধন করেছেন। ২৩ নভেম্বর ফিনিয়ায় মুক্তিবাহিনী হানা দিয়ে ৪ জন পাক সৈন্য খতম করেছেন। রাজশাহীর নওগাঁয় মুক্তি বাহিনীর সংঘর্ষে দু’জন পাক সৈন্য নিহত ও ৪ জন আহত হয়। ময়মনসিংহ শ্রীহট্ট রণাঙ্গনে ২৪ নভেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৭ জন পাক সৈন্য নিহত ও ৩ জন আহত এবং দিশর এলাকায় ৩ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। গৌরী নগরে মুক্তিবাহিনী পাক ঘাঁটির উপর…চালিয়ে ৩ জন পাক সৈন্য… রাজাকারকে খতম করে ও ২টি… ঘাঁটি বিধ্বস্ত করে। একই দিনে গৌরীনগর থেকে ১১ মাইল দূরে একটি সংঘর্ষে ১১ শত্রু সৈন্য নিহত হয়। ১৮ নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলার বক্সাগঞ্জের কাছে মাঝগেদায় মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ১৭ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৯ জন আহত হয়। ২২ নভেম্বর নেত্রকোণা মহকুমা শহরে হানা দিয়ে মুক্তিবাহিনী ৬ জন অসামরিক শত্রুসেনা খতম করে।
সূত্র: কালান্তর, ২৯.১১.১৯৭১