You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.25 | ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু আত্মগোপনের জন্য স্যুটকেস গুছিয়ে গাড়িতে তুলেছিলেন। - বয়ানে শেখ মণি - সংগ্রামের নোটবুক

২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু আত্মগোপনের জন্য স্যুটকেস গুছিয়ে গাড়িতে তুলেছিলেন। – বয়ানে শেখ মণি

একাত্তরের ২৫ মার্চের আগে বেশ কয়েক বছর পূর্বে থেকেই নানা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ও তাঁর নেতৃবৃন্দের বিশেষত, শেখ মণি, তােফায়েল, রাজ্জাক, কামারুজ্জামানসহ অনেকের সামরিক বােঝাপড়ার সমঝােতা এবং যােগাযােগ ছিল। স্বভাবতই অপ্রত্যাশিতভাবে ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি তখনও জানানাে না হলেও শেখ ফজলুল হক মণি জানতেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার হওয়ার জন্য প্রত্যক্ষভাবে তাজউদ্দিনকেই দায়ী করতেন। অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান তাঁর বইতে লিখেছেন:
 
“…মণি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ছাত্র ছিল। পরস্পরের মতামত সম্পর্কে আমরা অপরিচিত ছিলাম না। (সীমান্ত পেরােনাের কিছুদিন পর) তার সঙ্গে দেখা হতে সে আমাকে সাইকেল রিক্সায় তুলে নিল, তারপর যেতে যেতে অনেকক্ষণ আলাপ হলো। বঙ্গবন্ধু ২৫ মার্চ গ্রেফতার হয়েছেন, এ কথা নিশ্চিতভাবেই মণিই সেদিন বলে। সে আরাে বলে যে, পঁচিশ তারিখ সন্ধ্যায়ই বােঝা গিয়েছিল, পাকিস্তান আর্মি ক্রাকডাউন করতে যাচ্ছে। সন্ধ্যার আগেই ইয়াহিয়া খান যে গােপনে বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করেছেন—সে খবরও বঙ্গবন্ধু পেয়েছিলেন। মণি অনেক রাত পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ছিলো। স্থির হয়েছিল তিনি আত্মগােপন করবেন – জীবনে এই প্রথমবারের মতো। তার প্রস্তুতি হিসেবে একটা গাড়িতে বঙ্গবন্ধুর স্যুটকেশও তােলা হয়েছিলো। তারপর কোনাে বিশ্বস্ত ব্যক্তির কাছ থেকে একটা টেলিফোন পেয়ে বঙ্গবন্ধু মত বদলে ৩২ নম্বরের বাড়িতে থেকে যান এবং সেখান থেকেই পাকিস্তানিরা ধরে নেয়।
ফোনটা কে করেছিলেন, স্বভাবতই তা জানতে চাই। মণি কারাে নাম বলেনি। তবে আকারে ইঙ্গিতে যাকে বুঝিয়েছিল তিনি তাজউদ্দিন আহমেদ। বঙ্গবন্ধু না থাকলে তাজউদ্দিনের নেতৃত্ব নিরঙ্কুশ হবে, এ ধরনের একটি ধারণা বা উদ্দেশ্যের ইঙ্গিতও সে দিয়েছিল।
 
তাজউদ্দীনের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা মণির অজানা ছিলোনা। সেকারণে নয়, বরং কথাটা বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য এবং মণি যে কারো বিরুদ্ধে কোন প্রচারাভিযান চালাচ্ছেনা তা বোঝাবার জন্য সে নাম বলেনি, তা আমি স্পষ্ট অনুভব করেছিলাম।” [1, 2]

References: 

[1] আমার একাত্তর – আনিসুজ্জামান, পৃষ্ঠা ৫৮-৫৯
[2] এ এইচ এম কামারুজ্জামান – সালিম সাবরিন, পৃষ্ঠা ৮৭-৮৮