২০ মার্চ ১৯৭১ঃ আজকের এদিনে শেখ মুজিব
আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জনগনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন ১৪ মার্চ ঘোষিত নির্দেশাবলী এবং এতদসংক্রান্ত ব্যাখ্যার উপর আন্দোলন চলবে। তিনি ২৩ মার্চ বাংলাদেশে সরকারী ছুটি ঘোষণা করেন( ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এদিন পাকিস্তান দিবসের পরিবর্তে বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করে)। তিনি আন্দোলন নস্যাৎ এবং উস্কানী দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারন করেন। এছাড়াও তার বাসভবনে আগত ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন কর্মচারী ইউনিয়ন, ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়ন, অল বাংলাদেশ ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন শোভাযাত্রার গ্রুপ সমুহের উদ্দেশে তিনি বক্তব্য দেন। তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন বাংলাদেশ আর কারো বাজার হয়ে থাকবে না। তিনি বলেন বাচতে হলে মানুষের মত বাঁচবো মরতে হলে বীরের মতো মরবো। তিনি সকলের উদ্দেশে বলেন আন্দোলন চলমান থাকবে এবং এ আন্দোলন বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য জনগনের প্রতি আহ্বান জানান। নৌবাহিনী প্রাক্তন সদস্যদের প্রতি তিনি বলেন আন্দোলনে আমরা জয়ী হব। এ সময় এক প্রাক্তন নৌবাহিনী সদস্য চীৎকার দিয়ে বলেন বঙ্গবন্ধু বাংলার স্বাধীনতা কি করে আদায় করতে হয় তা আমরা জানি আপনি শুধু আমাদের পাশে থাকুন শেখ মুজিব উত্তরে তাকে জানান জয়বাংলা।
তিনি ফাইজার বাংলাদেশ লিঃ কর্মচারী সমিতি থেকে দান বাবদ চেক গ্রহন করেন।
মুফতি মুজিব, দৌলতানা মুজিব বৈঠক
জমিয়তে উলামা ইসলামের সাধারন সম্পাদক এবং ডেরা ইসমাইল খান থেকে জুলফিকার আলী ভুট্টোকে পরাজিত করে নির্বাচিত এমএনএ মুফতি মাহমুদ দৌলতানার সাথে শেখ মুজিবের সাথে আসলেও দৌলতানার বৈঠকের পর পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। তারা ৪০ মিনিট আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে সাহায্য করার জন্যই তিনি ঢাকা এসেছেন। তিনি বলেন শেখ মুজিবের সাথে আলোচনা আরও চলবে।
পরে দৌলতানা শেখ মুজিবের সাথে বৈঠক করেন। দৌলতানা বলেন শেখ মুজিবের সাথে তার সম্পর্ক ৩০ বছরের (১৯৪১ সাল থেকে)। তিনি তার ভাইয়ের মত। এ সময় তার সাথে পাঞ্জাব মুসলিম লীগ সভাপতি সর্দার শওকত হায়াত খান উপস্থিত ছিলেন।
শেখ মুজিব জরুরী ভিত্তিতে মওলানা ভাসানীকে ঢাকায় তলব করেন। আব্দুস সামাদ আজাদ তাকে চট্টগ্রাম থেকে আনতে গাড়ীসহ গমন করেন।
ছুটি ঘোষণা
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২৩ মার্চকে পাকিস্তান দিবসের পরিবর্তে বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা করায় শেখ মুজিব এদিন সরকারী ছুটি ঘোষণা করেন।