মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু নেতিবাচক বিষয়
সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক বিষয় নিয়ে সদর দপ্তরে একটি ‘পজিশন পেপার’ লেখা হয়। নিচে আমি সেই প্রতিবেদনের কিছু অংশ তুলে ধরলাম। গেরিলাদের আনুগত্য, সাহস এবং আত্মাৎসর্গের মতাে ব্যক্তিগত গুণাবলির প্রতি যথাযথ মনােযােগ দেওয়া হয়নি। এটি কাকতালীয় যে, কিছু পরিমাণ ছেলে প্রয়ােজনীয় মানসম্পন্ন। রিক্রুটদের অধিকাংশই হয় প্রণােদিত নয় অথবা গেরিলা হওয়ার যােগ্যতা নেই । এতে ফল দাঁড়িয়েছে এরকম:
ক, কিছু গেরিলা ভেতরে গিয়েছে মূলত অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে, যেমন লুট, হত্যা, ডাকাতি ইত্যাদি এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রচণ্ড ক্ষতি করেছে।
খ, কিছু দল ভেতরে গিয়ে প্রায়ই তাদের অস্ত্রগুলাে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য রেখে দিচ্ছে এবং কোনাে অভিযান পরিচালনা করছে না। ছেলেদের একটি বড় অংশ একেবারে তাৎপর্যহীন কিছু কাজ করছে, যা যুদ্ধে কোনাে সাহায্য করছে না, যেমন টেলিফোনের তার কেটে দেওয়া।
গ, শতকরা মাত্র ১০ থেকে ১৫ ভাগ ছেলে সত্যিকার অর্থে যথাযথ অভিযান পরিচালনা করছে। তবু ভেতরের সংগঠন ও নেতৃত্বের অভাবে এর সার্বিক প্রভাব প্রায় নগণ্য।
ঘ. চূড়ান্ত বিচারে ভেতরের কিছু গেরিলা অভিযানে আংশিকভাবে হলেও উল্টো ফল হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ আমাদের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যেসব মুক্তিযোদ্ধা এসব কাজ যারা করেছেন তারা কি আজ আর এসব স্বীকার করবেন?
Reference:
১৯৭১ ভেতরে বাইরে, এ কে খন্দকার, p 97