পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পূর্ব বাংলার ছাত্রদের উপর হামলা-মামলা চলছিলো। ফলে একটি ছাত্রসংগঠন গড়ার প্রয়োজন ছিল। এদিকে পুরান ঢাকার নবাবপুর, পাটুয়াটুলিতে হিন্দুদের তাড়ানোর জন্য দাঙ্গা বাধানো হয়। টার্গেট অবাঙ্গালি ব্যবসায়ীদের হাতে নিয়ন্ত্রণ দেয়া। ৫১ সালে ঢাবির নেতারা ক্যাম্পাসে সম্মলন না করতে পেরে বুড়িগঙ্গায় ভাসমান নৌকায় বসে গঠন করলেন পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগ। দেশভাগের সময় অনেক হিন্দু শিক্ষক, ছাত্র আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যান। একইভাবে অবাঙ্গালিরা এসে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, সৈয়দপুর ইত্যাদি যায়গায় মোহাজের কলোনি গড়ে তোলে। অবাঙ্গালিদের ছেলেমেয়েরা ঢাকার স্কুলে ভর্তি হয়। আর অনেকে ঢাবিতে শিক্ষক হয়ে যোগ দেন। এদের মধ্যে মওদুদির শিষ্য অর্থনীতির অধ্যাপক ওজায়েরও ছিল। তিনি ছাত্রদের মাঝে তার গুরুর পুস্তিকা বিতরণ শুরু করে দেন। অপরদিকে কোলকাতা থেকে আসা অংকের অধ্যাপিকা ফজিলাতুন্নেসা জোহা ইডেন কলেজে এসে ভাষা আন্দোলনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। ৫৩ সালে মেয়েদের গড়া সেই শহিদ মিনার ভাঙ্গার মাস্টারমাইন্ড তিনিই। পঞ্চাশের দশকের শুরুতে ঢাবির কিছু ছাত্র “সংস্কৃতি সংসদ” গড়ে তুললেও অপরদিকে ভার্সিটির শিক্ষক ব্যারিস্টার মুস্তাফা গড়েন পাকিস্তানি ও মিশরের মৌলবাদী সংস্থার অনুকরণের “ইসলামী ভাতৃসঙ্ঘ”। প্রথম গ্রুপটি ‘আহবান’ নামে প্রচারপত্র বিলি করে। আর দ্বিতীয় গ্রুপ ‘আওয়াজ’ নামে বিলি করে। এক গ্রুপ ‘জবানবন্দি’নামে নাটক মঞ্চস্থ করে (বিহারি ও এক শ্রেণির ঢাকাবাসীর বাঁধা পেরিয়ে)। আর অন্য গ্রুপ ‘কাশ্মীর’ নামে নাটক মঞ্চস্থ করে। এভাবেই চলতে থাকে নয়া সংস্কৃতি-যুদ্ধ।
- Edited by Dr Razibul Bari
সূত্র : স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় – রফিকুল ইসলাম