You dont have javascript enabled! Please enable it! গােলাম রহমান - সংগ্রামের নোটবুক
গােলাম রহমান
শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক গােলাম রহমানের জন্ম কলকাতায়, ১৯৩১ সালের ১৮ নভেম্বর (অন্য সূত্রে ২৮ নভেম্বর)। ১৯৮৭ সালে কলকাতা মডার্ন স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন। এরপর ১৯৪৯ সালে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভর্তি হন। সামপ্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তাঁর পরিবার ১৯৫০ সালে ঢাকায় চলে আসে। গােলাম রহমানও পড়াশােনা অসমাপ্ত রেখে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন। এখানে এসে জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু পড়াশােনা বেশি এগােয়নি। শিক্ষাজীবন শেষ না করেই তিনি সাংবাদিকতা পেশায় চলে আসেন। সাংবাদিক জীবনের শুরুতে গােলাম রহমান কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদ’ ও ‘দৈনিক ইনসাফ পত্রিকার ছােটদের পাতা ও সাহিত্য সাময়িকী সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালে ঢাকা থেকে নিজের সম্পাদনায় ‘মধুমালা’ নামে ছােটদের জন্যে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন গােলাম রহমান। তিনি তঙ্কালীন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। গােলাম রহমান ঢাকা থেকে প্রকাশিত অধিকাংশ পত্রিকার সাথে কখনও না কখনও যুক্ত ছিলেন।
তিনি সাংবাদিকতা ছাড়া শেষের দিকে নানা ধরনের ব্যবসাও করেছেন।  গােলাম রহমান ছােটদের জন্যে প্রচুর লিখেছেন। এর মধ্যে রকমফের’, ‘বাড়ি নিয়ে বাড়াবাড়ি’, ‘আজব দেশে এলিস’, ‘বুদ্ধির টেকি’, ‘পানুর পাঠশালা’, ‘চকমকি’ বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। বড়দের জন্য রচিত বইগুলাে হলাে : ‘নেতা ও রাণী’, ‘আমাদের বীর সংগ্রামী’, ‘জীবনের বিচিত্রা’। তিনি চেনামুখ’ নামে একটি নাটকও রচনা করেছিলেন। ১৯৬৯ সালে তিনি শিশু সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলা একাডেমি থেকে তার কিছু অসম্পূর্ণ রচনাসহ প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত রচনা নিয়ে চার খণ্ডে “গােলাম রহমান রচনাবলী’ প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারির মধ্যরাতের পর কয়েকজন তরুণ তার বাসায় আসে। তারা অবাঙালিদের ক্যাম্প পাহারা দেবার নাম করে গােলাম রহমানকে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন পুরান ঢাকার ধােলাই খালের পাড় থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ –  আলী মাে. আবু নাঈম, ফাহিমা কানিজ লাভা