৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ মুজিব ইন্দিরা ৩য় বৈঠক, ইন্দিরার সাংবাদিক সম্মেলন দিল্লী যাত্রা ও ব্রিটিশ পর রাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বৈঠক
সকালে রাজ ভবনে মুজিব ইন্দিরা ৩য় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ এবং আন্তজা কার্তিক বিষয়ে উভয়ের মধ্যে মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর ইন্দিরা গান্ধী দিল্লী রওয়ানা হয়ে যান। বৈঠকে মাঝে মাঝে সাহায্যকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ মুজিবুর রহমান ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশ সফরের আহবান জানালে তিনি বলেন প্রথম সুযোগেই তিনি বাংলাদেশ আসবেন।
এদিন উভয় দেশের যুক্ত বিবৃতই প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে ২৫ মার্চের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয় বাংলাদেশ সরকার সকল শরণার্থী ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। উভয় দেশ সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়।
সকালে আরেক অনুষ্ঠানে শেখ মুজিব ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া বিভিন্ন উপহার সামগ্রী গ্রহন করেন। এর মধ্যে ছিল অর্থ সাহায্য, গাড়ী, এ্যাম্বুলেন্স ও ত্রান।
কলকাতা থেকে দিল্লী ফিরে যাবার পথে দমদম বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেছেন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিলে পাকিস্তানের সাথে কোন আলোচনা হতে পারেনা আর পাকিস্তানের সাথে আলোচনা হলে তা হবে ভারত পাকিস্তান ইস্যুর উপর কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে না। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে তার আলোচনা সন্তোষজনক হয়েছে।
দুদেশের মধ্যে আলোচনায় যা সিদ্ধান্ত হয়েছে তা হল দু দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। দু দেশের মধ্যে বাণিজ্য হবে রাষ্ট্র টু রাষ্ট্র পদ্ধতিতে। বৈঠকে বন্যা নিয়ন্ত্রন এবং ফারাক্কা ইস্যু আলোচনা হয়। দু দেশ পরবর্তীতে তাদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করবে।
দিল্লীতে সফররত ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্যার এলেক্স ডগলাস হিউম এর সাথে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী সরণ সিং এর বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের অন্যতম ইসসু ছিল বাংলাদেশের পুনর্গঠন। ব্রিটিশ মন্ত্রী কিভাবে বাংলাদেশের জনগনের পুনর্বাসন দ্রুত করা যায় তার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। সরণ সিং এর সাথে আলোচনায় সরণ সিং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।