দেশের স্বার্থে জেলবন্দি বীর
২৩ জুলাই ১৯৪৯ তারিখের গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা যায়, ৬ জুলাই ১৯৪৯ তারিখে গোপালগঞ্জে বাংলায় ৩ পাতার একটি প্যামপ্লেট (লিফলেটসদৃশ) বিলি করা হয় যার শিরোনাম ছিলো “দেশের স্বার্থে জেলবন্দি বীর”। এটি দুই আনায় বিক্রি করা হয়। সম্পাদক ছিলেন শাহাদাত হোসেন। এটি প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ কোর্সের ছাত্র শামশুল আলম শরিফ। এতে জনগণের স্বার্থে এবং পাকিস্তানের স্বার্থে শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরা হয়। বলা হয়, দেশের মুসলমান সমাজের অর্থনৈতিক মুক্তির পথিকৃৎ শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলন করে তাকে জেল খাটতে হয়। আবার ১৯৪৯ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন কর্মচারিদের জন্য আন্দোলন করায় বহিষ্কৃত ছাত্রদের পক্ষে প্রতিবাদ করায় তাকে জেলে যেতে হয়। পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল নেতাদের মধ্যে সে সবচেয়ে সাহসী এবং তাকে বন্দী রাখা হলে সেটি গোপালগঞ্জ সাবডিভিশনের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থের পরিপন্থী হবে। সে জেলে বন্দী থাকলে সেই সুযোগে শামসুদ্দিন আহমেদ এম এল এ এবং ওয়াহিদুজ্জামান ঠাণ্ডা মিয়াঁর মত সুযোগ সন্ধানী লোকেরা সমাজসেবার নামে গোপালগঞ্জের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। এবং তাদের দ্বারা এলাকার শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার চলমান প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে। তাদের চক্রান্তে দেশের মানুষ অশিক্ষার করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাবে। দেশের এই দুর্যোগময় সময়ে হিন্দু মহাসভার দালালরা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় আরও জোরদার বাধা দিতে থাকবে। এছাড়া জানা যায় যে, তারা গোপালগঞ্জ মসজিদ ফান্ডের একাউন্ট নিয়েও টালবাহানা করছে। এসব লোক সম্পর্কে গোপালগঞ্জের এলাকাবাসীর সজাগ থাকা উচিৎ। যদিও মুজিবুর রহমান জেলে আছেন, তথাপি তার সমর্থকরা সার্বক্ষনিক এসব বিষয়ে সজাগ থাকবে বলেও প্রচার করা হয়। [1, pp. 227–229]
Reference:
[1] S. Hasina, Secret Documents of Intelligence Branch on Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, Vol I 1948-1950. Hakkany Publisher’s, 2018.