১০ মে ১৯৭১ মৌলবী ফরিদ আহমদ
সাবেক বিএনপি নেতা ৩ বারের এমপি প্রার্থী ও ৯৬ এর এমপি খালেকুজ্জামানের পিতা মৌলবী ফরিদ আহমদ রামুর রশিদ নগর মাছুয়াখালী গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন।
মৌলবী ফরিদ আহমদ ৪৬-৪৭ সেশনে ডাকসু ভিপি ছিলেন। আরকান মটর ওয়ার্কাস ইউনিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি, কক্সবাজার বার এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি, কক্সবাজার জামে মসজিদের সেক্রেটারি, কক্সবাজার ক্রীড়া সমিতির সেক্রেটারি পদে দায়িত্ব পালন করেন। মৌলভী ফরিদ আহমদ রেডিওর ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তৎকালিনজাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ খেলার রেডিও ধারাভাষ্য দিয়েছেন তিনি। মৌলভী ফরিদ আহমদ কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবেও সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতিও ছিলেন। ছাত্র রাজনীতি ছেড়ে কলেজের অধ্যাপনা, পরে আইন পেশায় নিয়োজিত হলেও জাতীয় রাজনীতিতেও নিজেকে সক্রিয় রাখেন সমান তালে।
১৯৫২ সালে তিনি তদানিন্তন জমিয়ত /নেজামে ইসলাম পার্টিতে যোগদান করেন এবং দ্রুত দলটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি ১৯৫৪ সালে যুক্ত ফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে এম.এল.এ, ১৯৫৫ সালে এম.সি.এ(এমএনএ) এবং তৎকালিন যুক্তফ্রন্টের পার্লামেন্টারি পার্টির চীফ হুইপ নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতায় ১৯৫৭ সালে মুসলিম লীগ কোয়ালিশন সরকারের আইআই চুন্ড্রিগড়(২ মাস) মন্ত্রীসভার শ্রম মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। আইয়ুব খানের আমলে তিনি নিজেকে চলচ্চিত্র লাইনে প্রতিষ্ঠা করার কাজে নিয়োজিত করেন। ২-৩ বছর তিনি পাঞ্জাবী টুপী বাদ দিয়া সার্ট প্যান্ট জীবন শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সম্মিলিত বিরোধী দলের (COP) চেয়ারম্যান(২ মাস), পিডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান(৬৯-৭১) এবং ১৯৬৯ সালে ৮ দল নিয়ে গঠিত ডেমোক্রেটিক একশন কমিটি (DAC) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং পূর্ব পাকিস্তান শাখার আহবায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সনের নির্বাচনে সমগ্র কক্সবাজার জেলা আসনে তীব্র প্রতিদন্তিতা করে আওয়ামী লীগ নেতা (কলাগাছ প্রার্থী) নুর আহমেদ এর কাছে হেরে যান। ৭১ সালের এপ্রিল মাসে শান্তি কমিটি গঠন হলে সেই কমিটিতে যোগ না দিয়ে কয়েকদিন পর পাল্টা শান্তি ও কল্যাণ কমিটি গঠন করেন এবং তার সভাপতি হন। অন্যান্যদের মত গুরুতর অপরাধী না হলেও ঐ সময়ের শীর্ষ ৬ জন রাজাকারের ১ জন ছিলেন তিনি। ৭১ সালে তার দল থেকে ১ জন মন্ত্রী নেয়া হয়। ১৬ ডিসেম্বরের পর ১৮ ডিসেম্বর লালবাগ থানায় আত্মসমর্পণের পর মুজিব বাহিনী তাকে ছিনাইয়া নেয়। ইকবাল হলে টানা ৫ দিন আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ২৩ তারিখ সলিমুল্লাহ হলের পিছনে তার লাশ পাওয়া যায়।