৩০ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ সিপিবি ন্যাপ ছাত্র ইউনিয়নের এর অস্র সমর্পণ অনুষ্ঠান
ঢাকা স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেখ মুজিবের কাছে সিপিবি, ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়ন এর গেরিলা বাহিনী অস্র সমর্পণ করেছে। শেখ মুজিব সেখানে পৌছলে দলগুলির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শেখ মুজিবকে সাদর অভ্যর্থনা জানান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তী, কমরেড খোকা রায়, কমরেড সালাম, কমরেড সাইফ উদ্দিন মানিক ন্যাপের চৌধুরী হারুনুর রশিদ, ছাত্র ইউনিয়নের আবুল হাসনাত।
কমরেড ফরহাদের নেতৃত্ব এ গেরিলারা শেখ মুজিবকে অভিবাদন জানান। তারপর শেখ মুজিবকে তিন সংগঠনের পক্ষ থেকে মাল্য ভূষিত করা হয়। প্রথমে সিপিবির পক্ষে আব্দুস সালাম, তারপর ন্যাপ এর পক্ষ থেকে চৌধুরী হারুনুর রশিদ, তারপর ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মাল্য ভূষিত করেন আবুল হাসনাত। শেখ মুজিব তাদের সকল প্লাটুন ঘুরে দেখেন এবং মহিলা প্লাটুনের কাছে যেয়ে অভিভূত হয়ে যান।
কমরেড ফরহাদ সবাইকে অস্র সমর্পণের নির্দেশ দেয়ার পর ন্যাপ থেকে অস্র জমা দেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, এর পর অস্র জমা দেন সিপিবির ওসমান গনি, এর পর জমা দেন ছাত্র ইউনিয়নের মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
অস্র গ্রহন শেষে শেখ মুজিব তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন চিরদিনের জন্য আমি অস্র নিচ্ছিনা। সাম্রাজ্যবাদীরা এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে খেলছে তাই এখন অস্র নিলেও প্রয়োজনে আবার তাদের অস্র দেয়া হবে। তিনি বলেন আমাদের স্বাধীনতা কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কেউ যদি আমাদের স্বাধীনতায় আঘাত হানে আমরাও আবার মিলিতভাবে সর্ব শক্তি নিয়োগ করব। অনুষ্ঠানে আব্দুস সালাম, মোহাম্মদ ফরহাদও বক্তব্য রাখেন।
সভায় কমরেড সালাম বলেন আমরা সমাজতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। বঙ্গবন্ধুও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর এ পদক্ষেপকে সাফল্য মণ্ডিত করার জন্য আমরা কাজ করে যাব। অনুষ্ঠানে ঢাকার তিন মহকুমার অস্র জমা দেয়া হয়। জনাব ফরহাদ ঘোষণা করেন এ বাহিনী গুলির বাকী অস্র স্ব স্ব মহকুমায় জমা দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা এবং বিদেশী কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। আবারো জাতীয় সঙ্গীতের মূর্ছনায় অনুষ্ঠান শেষ হয়।