আবুল কাশেম মাে. ফারুক
আবুল কাশেম মাে. ফারুকের জন্ম কিশােরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আবু তালেব ভূইয়া, মায়ের নাম বেগম নূরুন নেসা। তিন ভাই তিন বােনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর ডাক নাম ফারুক। আবুল কাশেম মাে. ফারুক কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজ থেকে বি, এসসি. পাস করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে এম. বি. বি. এস. পাস করেন। এরপর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে যােগ দেন। পরে তিনি ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। ১৯৭১ সালের মার্চে মাে. ফারুক ছিলেন কুমিল্লা ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে ৪০তম ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সে কর্মরত। তিনি তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী মনােয়ারা বেগম ও ছয় মাস বয়সী ছেলে সােহাগসহ থাকতেন ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে।
৩০ মার্চ সকালে অন্য বাঙালি অফিসারদের সাথে তাকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ওই দিন বিকাল ৪টার পর আরও কয়েকজন বাঙালি অফিসারের সাথে ক্যাপ্টেন আবুল কাশেম মাে. ফারুককে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়। পরে তাদের মরদেহ পাশেই একটি গণকবরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত এ খবর জানতে পারেননি। ওই হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন পর তার স্ত্রী ও ছেলে সােহাগকে আটক করে অন্য বাঙালি পরিবারের সাথে ময়নামতি ইস্পাহানী স্কুলে বন্দি করে রাখা হয়। জুলাই মাসের শুরুতে তারা মুক্তি পান। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই ডা. ফারুকের দ্বিতীয় ছেলে পরাগের জন্ম হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মনােয়ারা বেগম বহু কষ্টে পড়াশােনা করেন। তিনি কিছুদিন শিক্ষকতা করেছেন ও পরে তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। মনােয়ারা বেগম এখন আর বেঁচে নেই।
সূত্র : শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ- আলী মো. আবু নাঈম , ফাহিমা কানিজ লাভা