You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.23 | তৌফিক ইলাহি চৌধুরী - সংগ্রামের নোটবুক

২৩ এপ্রিল ১৯৭১ তৌফিক ইলাহি চৌধুরী
এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে এই সময়েই ক্যাপ্টেন হাফিজ নাভারনে শত্রুবাহিনীর ঘাঁটির উপর একটা সাফল্যজনক দু:সাহসিক রেইড চালান। এই রেইডে প্রথম বেঙ্গলের লোকজন ছিল। এতে করে যদিও শত্রুর কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয় তবুও তারা আমাদের অবস্থান সম্বন্ধে সচেতন হয়ে ওঠে এবং তারপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিরাট আকারে আমাদের অবস্থানের উপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে শত্রুবাহিনী গোলন্দাজ বাহিনীর সাহায্য নিয়েছিল, যার প্রত্যুত্তরে আমাদের কিছুই ছিলনা। তাই আক্রমণকারী বাহিনীর উপর চাপ সৃষ্টি করে আমরা পিছু হটতে থাকি। এই সময় হাবিলদার মেজর মুজিবুর রহমান সহ আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা এই যুদ্ধে শহীদ হন। অনেকেই হতাহত হন। আমরা পরে জেনেছিলাম শত্রুর ক্ষয়ক্ষতি হতাহত মিলিয়ে প্রায় দুই শতাধিক ছিল। সেই এলাকায় এক মৃত মেজরের নামে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক ছোট মেমোরিয়াল তৈরী করেছিল।
আমাদের পশ্চাদপসরণ বিশৃঙ্খলভাবে হয়েছিল। পশ্চাদপসরণের সময় কিছু মূল্যবান হাতিয়ার খোয়া যায়। বেনাপোল চেকপোষ্টে আমাদের দফতর স্থানান্তরিত করা হয়। ঐদিন জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বৃটিশ এমপি টমাসম্যানসহ চেকপোষ্টে আসেন এবং ঐখানে তার বিবৃতি দনে। ঐদিন পরে শত্রুবাহিনী আমাদের হেডকোয়ার্টারের উপর গুলিবর্ষণ করে। এই অতর্কিত আক্রমণের জন্য আমরা মোটেও তৈরী ছিলাম না। শত্রুর আক্রমণে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি এবং বাংলাদেশের মাটিতে শেষ ঘাঁটিটুকু ছেড়ে দিয়ে ভারতে পশ্চাদপসরণ করি।