১৬ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ জাতীয় শোক দিবস- ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি আবু সাইদ চৌধুরী, অতিথি ছিলেন মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ। ছাত্রনেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকি, সাধারন সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, ডাকসু সহ সভাপতি আসম রব, ডাকসু জিএস আব্দুল কুদ্দুস মাখন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আবু সালেহ এবং ব্রিটেনের বাংলাদেশ সংগ্রাম কমিটির আজিজুল হক। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বলেন বিভিন্ন দেশের মানুষ বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবান তাই আমাদের কথা এবং কাজের মধ্যে এমন কোন এমন কিছু প্রকাশ করা উচিত নয় যে তাদের শ্রদ্ধা ক্ষুণ্ণ হয়। আওয়ামী লীগ নেতা তর্কবাগীশ বলেন বাঙ্গালী দের প্রতি পাকিস্তানী সৈন্যরা যে বীভৎস অত্যাচার চালিয়েছে তার নজীর পৃথিবীতে নেই। ওরা মানুষ নয় ওরা পশু। তাদের প্রতি আমরা প্রতিশোধ নেব তবে পশুর মত নয় মানুষের মত। আসম রব বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের জন্য শোক দিবস পালনে শুধু চোখের পানি ফেলে হা হুতাশ করা হলে শোক প্রকাশের মুল কারন দূর হবে না। যে জন্য মানুষ অকাতরে জীবন বিসর্জন দিয়েছে তা পূর্ণ করতে হবে। তিনি বলেন শহীদ কতজন তা এখনও নিরুপন করা হয়নি সবাই অনুমান নির্ভর কথা বলছে। তিনি শহীদের সংখ্যা নিরূপণ এবং তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।আব্দুল কুদ্দুস মাখন বলেন বাংলাদেশের মুক্তির জন্য যেভাবে বাংলার মানুষ রক্ত দিয়েছে তার নজীর পৃথিবীতে নেই। তিনি বলেন সোনার বাংলাদেশ গড়তে এখন স্লোগান হল কাস্তে কোদাল ধরতে হবে সোনার বাংলা গড়তে হবে। নুরে আলম সিদ্দিকি বলেন একটি নির্দিষ্ট কর্মসূচীর মাধ্যমে শহীদ দের দায়িত্ব যদি সরকার গ্রহন না করে তবে স্বাধীনতার সকল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে। শাহজাহান সিরাজ বলেন দেশের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যাবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে শহীদদের স্মৃতি স্থায়ী ভাবে স্মরন করা সম্ভব। পরে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শহীদের আত্মার শান্তির জন্য মোনাজাত করেন।