৯ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ নয়াদিল্লীতে আব্দুস সামাদ আজাদ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের নয়াদিল্লী সফর শেষে দু দেশের মধ্যে একটি যৌথ ইস্তেহার প্রকাশিত হয়। ইস্তেহারে বলা হয় যেহেতু স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ প্রতিষ্ঠিত তাই অন্য সকল দেশের তা মেনে নেয়া উচিত। যারা উপমহাদেশে স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে বা শান্তি বিঘ্ন ঘটাতে চায় তারা স্বাধীন বাংলাদেশের বাস্তবতাকে অস্বীকার করবে। ইতিহাসের গতিপথকে পিছনে ঠেলে দেয়ার সকল অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে বলে উভয় দেশ বিশ্বাস করে। উভয় দেশ পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার আহবান জানায়।
যুক্ত ইস্তেহারে আরও বলা হয় উভয় দেশের সরকারী পর্যায়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ভারতের প্রেসিডেন্ট গিরি, অর্থমন্ত্রী চেবন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরন সিং, সরবরাহ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী খাদিলকার, সেচ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী কেএল রাও, শিল্পোন্নয়ন মন্ত্রী মইনুল হক, কৃষি মন্ত্রী ফখরুদ্দিন আহমেদ এর সাথে বৈঠকে মিলিত হন। দুটি দেশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থনকারী সকল দেশের প্রতি এবং পৃথিবীর সকল সমর্থনকারী জনগনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। বাংলাদেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা প্রথম সফর হিসেবে ভারত সফর করায় ভারত সরকার খুশী হয়েছে। ভারত সরকার বাংলাদেশকে সকল প্রকার সাহায্য সহযোগিতার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তার দেশ বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার ব্যাপারে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতা করবে। বাংলাদেশ সরকার যখনি অনুরোধ করবে তখনি ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশ ত্যাগ করবে। সামাদ আজাদ এদিন অসুস্থ মওলানা ভাসানির সাথে দেখা করেন। তিনি তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন। মওলানা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দিল্লীতে চিকিৎসাধীন আছেন।