মুন্সি আব্দুর রউফ
৮ এপ্রিল ১৯৭১। স্বয়ংক্রিয় এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত সাতটি স্পিডবোট এবং দুটো লঞ্চ যোগে কাপ্তাই এর বুড়িঘাটের মুক্তিবাহিনীর নতুন প্রতিরক্ষা ঘাঁটির দিকে এগুচ্ছিল তাদের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা ঘাঁটির কাছাকাছি পৌঁছেই পাকিস্তান বাহিনী শুরু করল আক্রমণ। স্পিড বোট থেকে ক্রমাগত চালাতে লাগল মেশিনগানের গুলি আর লঞ্চ দুটো থেকে ছুটে আসছে অবিরাম তিন ইঞ্চি মর্টারের শেল। একের পর এক ক্রমাগত মর্টারের গোলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা রউফের একার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। শত্রুর একটি মর্টারের গোলা হঠাত্ এসে পড়ে তার বাঙ্কারে। মৃত্যুশেলে ঝাঁঝড়া হয়ে যায় তাঁর সমস্ত শরীর। থেমে গেলেন তিনি। হাত থেকে পাশে ছিটকে পড়ল মেশিনগান। ততক্ষণে তাঁর সহযোগী যোদ্ধারা সবাই পৌঁছে যেতে পেরেছে নিরাপদ দুরত্বে। প্রকৃত বন্ধুর মতো একটি মাত্র মেশিনগান দিয়ে একই সঙ্গে শত্রুদের ঘায়েল করলেন এবং সহযোদ্ধাদের রক্ষা করলেন।
হয়ে গেলেন অমর, বীর, শহীদ, বীরশ্রেষ্ঠ। ১৯৯৬ সালে দয়ালন চন্দ্র চাকমা নামে এক আদিবাসী বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধিস্থল শনাক্ত করেন। শনাক্ত করার পর তাঁর সমাধিস্থলটি সরকার নতুনভাবে সজ্জিত করা হয়।