৭ জানুয়ারী ১৯৭২ঃ বন্দী সৈন্যদের সমাবেশ
পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী বাঙ্গালী সেনারা একটি সমিতি করে আজ এক সমাবেশ করেছেন। সম্মেলনে উপস্থিত থেকে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান। তিনি বলেন আজকের সরকার কারো বেক্তিগত নহে। ইহা সাড়ে সাত কোটি মানুষের সরকার যার সাথে মানুষের নাড়ির যোগাযোগ রয়েছে। সে কারনে দেশ গঠনে মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গী বদলানোর প্রয়োজন রয়েছে। তিনি দেশ পুনর্গঠন কাজে জনগনের উদ্যোগকে সরকার সব সময় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাবে। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন বাঙ্গালীরা আজ কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এক মহান জাতি যে জাতি কোনদিন ইতিহাসের ন্রিশংশতম হত্যাকাণ্ডের মধ্যেও আত্মসমর্পণ করেনি। তিনি বলেন বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রতিটি বাঙ্গালীর অবদান কম নহে। তিনি বলেন যে উদ্দেশে বাংলার জনগন রক্ত দিয়ে বাংলার স্বাধীনতা এনেছে উহা বাস্তবায়নের জন্য সমাজতন্ত্র কায়েম করতে হবে। একমাত্র শোষণ হীন সমাজ বেবস্থা কায়েমের মধ্যে দিয়ে জনগনের দুঃখ দুর্দশা লাঘব হতে পারে। তিনি বলেন বাংলার সারে সাত কোটি জনগন সমভাবে দুঃখ দারিদ্র্য ভোগ করিব।
কিছু লোক আরাম আয়েশ করে কাটাতে পারবে না। তিনি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলার মানুষের ঐক্য সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন দেশে ১৮ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। সরকার এ সমস্যা মোকাবেলায় তৎপর রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি জনগনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন ভারত থেকে আগত সকল শরণার্থীর পুনর্বাসনের বেবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন খাদ্য ঘাট তি পূরণে বিদেশী বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। তিনি বলেন বীরাঙ্গনাদের পূর্ণ মর্যাদা দেয়া হবে। তিনি সমাজকেও তাদের স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করার আহবান জানান। বাংলাদেশ সরকার এর মধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে বন্দী পলাতক বাঙ্গালী সৈন্যদের কাজে যোগ দিতে। তাদের অবশ্য স্ক্রিন টেস্ট দিতে হবে।